English French German Italian Portuguese Russian Spanish

Related Articles

Search

Cyclone

‘চোখের সামনে ঘর, মানুষ উইড়া যাইতে দেখলাম’

Print

 

 

সুমন মোল্লা ও দুলাল ঘোষ | তারিখ: ২৪-০৩-২০১৩

 

শুক্রবার বিকেলে কয়েক মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। ধ্বংসস্তূপ থেকে চালের টিন খুঁজে বের করে জড়ো করছে ভাইবোন। তা দিয়ে তৈরি করতে হবে বসবাসের ঘর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুবলা গ্রাম থেকে গতকাল তোলা ছবি

এম সাদেক

 

 

 

‘দেখলাম হাপের (সাপ) মতো আইল। ছুপ (ছোবল) দিল। দেড় মিনিটের মধ্যে চইলা গেল। এক ছুপে সব শেষ। মানুষ নিছে চারজন, গরু দুইডা। ঘর উড়াইয়া ফালাইছে আটটা।’ টর্নেডোর ঘূর্ণিতে পড়েও বেঁচে যাওয়া জসিম মিয়া (৪৫) স্বজন হারিয়ে বারবার ভয়াল স্মৃতির কথা মনে করে অশ্রুসিক্ত হচ্ছিলেন।


জসিমের বাড়ি সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের নয়ঘরকান্দা গ্রামে। গত শুক্রবার বিকেলে টর্নেডো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যে ১৫টি গ্রামে আঘাত হানে, তার মধ্যে নয়ঘরকান্দা গ্রাম একটি। জসিমের চোখের সামনে দিয়ে ঘটে যায় তাণ্ডব। তিনি বেঁচে গেলেও টর্নেডো কেড়ে নেয় ওই বাড়ির আমেনা বেগম (৭০), আমেনার জা রোকেয়া বেগম (৭২), ইয়াসমিন বেগম (৩৫) ও নববধূ নীলা বেগমের (২৫) প্রাণ। আহত হয় দুই শিশুসহ সাতজন। এক যুগ ধরে জসিম নিহত ইয়াসমিন বেগমের বাড়িতে কাজ করছেন। গতকাল শূন্য ভিটায় লাশের পাশে বসে জসিম চোখের পানি ফেলছিলেন।


জসিম জানালেন, টর্নেডো শুরু হওয়ার সময় হতাহত ব্যক্তিরা কেউ ঘরে, কেউ উঠানে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে বাড়ি থেকে চার-পাঁচ শ গজ দূরে ছিটকে পড়েন একেকজন। টর্নেডো শুরুর কিছুক্ষণ আগে তিনি বাড়ির দিকে রওনা হন। বাড়ির একদম কাছে আসার পর টর্নেডো শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘বাতাসটা কেমন জানি লাগল। ভাবতে ভাবতে বেগ বাইরা গেল। এরপর চোখের সামনে আস্তা আস্তা ঘর, মানুষ উইড়া যাইতে দেখলাম। আমি কেমনে বাঁচলাম, কইতে পারি না। দেড় থাইক্কা দুই মিনিট পর বাতাস কইমা যায়।’


পরে তিনি আমেনা বেগমের মরদেহ বাড়ির পুকুরপাড় ও রোকেয়া বেগমকে বাড়ির পেছনে ঝোপে পড়ে থাকতে দেখেন। ইয়াসমিনের লাশ পড়ে ছিল জমিতে। আর নীলা বেগমের মরদেহ পাওয়া যায় ঘটনার এক দিন পর গতকাল শনিবার বাড়ি থেকে দূরের একটি গর্তে।


গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, এক দিন আগেও এই বাড়িতে লোকজনের বসতি ছিল, এমনটা বোঝার উপায় নেই। ভিটা ছাড়া বাড়ির আর কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট নেই। একমাত্র দ্বিতল ভবনটির ছাদ উড়ে গেছে। ভবনের রং পাল্টে কাদা বর্ণ রূপ পেয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে। খোলা আকাশের নিচে রাখা ছিল তিনজনের মৃতদেহ। প্রতিবেশীরা দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।


সব মিলিয়ে নয়ঘরকান্দা এখন শোকে কাতর এক গ্রাম। অথচ এক দিন আগেও গাছপালায় আচ্ছাদিত গ্রামটি ছিল সবুজ, ছায়াঘেরা। টর্নেডো বৃক্ষশূন্য করে দিয়ে গেছে গ্রামটিকে। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে দিয়ে গেছে কষ্টের উত্তাপ।

 

 

Source: prothom-alo

 

 


 

 

 

 

 

 

 

 

টর্নেডোতে লণ্ডভণ্ড পত্নীতলা, নিহত ২ আহত অর্ধশতাধিক

Print

 

 

31st March,2013

পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি

 

 

 

নওগাঁর পত্নীতলায় গতকাল বিকালে মাত্র ১২ মিনিটের টর্নেডো ও শিলাবৃষ্টিতে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। টর্নেডোর আঘাতে মামুনুর রশিদ (৫০) নামের এক শিক্ষক ওহিমু (৯) নামের এক শিশু মারা গেছে। এতে শিশুসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে।


উপজেলার মাটিম্লদর, পত্নীতলা, নজিপুর পৌরসভা, নজিপুর ইউনিয়ন, পাটিচরা, ঘোষনগর, আমাইড়, কৃষ্ণপুর, ধামইরহাট উপজেলার আড়ানগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ওপর টর্নেডো আঘাত হানে।


নিহত মামুন উপজেলার কুন্দন উচ্চ বিদ্যালয়ের মৌলভি শিক্ষক এবং ঘোষনগর ইউনিয়নের চকশ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে হিমুর বাড়ি পাটিচরা ইউনিয়নের নাগরগোলা গ্রামে। নিহত মামুন বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে গগনপুর কারিগরি কলেজে আশ্রয় নেয়। এ সময় ঝড়ের তাণ্ডবে ইটের দেয়ালটি ধসে পড়লে তিনি তাতে চাপা পড়েন। তাত্ক্ষণিকভাবে তাকে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান। অন্যদিকে হিমুকে রাজশাহী নেয়ার পথে মান্দা নামক স্থানে সে মারা যায়।


এ ঘটনায় আহতরা হলেন ওবায়দুল, মতিন, মমিন, শাহিনুর, শেফালি, জহির, শেফিন, আমানুল্লাহ, মমিনুর, তহির, আমিনা, বিমান, রুনা প্রমুখ। এদের মধ্যে মতিনকে উন্নত চিকিত্সার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


উপজেলার বিভিন্ন স্থানে থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ঝড় ও শিলাবৃষ্টির প্রভাবে উঠতি গম, বোরো, কলা, পেঁপে, পটোল, ক্ষিরাসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। আমের গুটিসহ পাতা পর্যন্ত ঝরে গেছে। গাছপালা উপড়ে ও ভেঙে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তার ছিঁড়ে গিয়ে টেলিফোন ও বিদ্যুত্ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কাঁচা ঘরবাড়িসহ অধিকাংশ টিনের বাড়ির চালা উড়ে যাওয়ায় ভুক্তভোগীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শেষ হওয়ার ২ ঘণ্টা পরও মাঠে ও রাস্তার পাশে শিলাখণ্ড জমে থাকতে দেখা গেছে।


এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হায়াত রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করছেন।

 

 

 

 

Source: amardeshonline

 


 

 

 

{jcomments on}

 
| + - | RTL - LTR