হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
হাটহাজারী উপজেলার ১১ মাইল এলাকায় পাওয়ার পিকিং প্লান্টের দূষিত বর্জ্য হালদা নদীতে পড়ছে। এতে নদী থেকে ডিম আহরণকারী ও রেণু উৎপাদনকারীদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলার ১১ মাইল নামক স্থানে ১০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন পিকিং বিদ্যুৎ পাওয়ার কেন্দ্র সরকার বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্মাণ করে। গত ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠ থেকে ডিজিটাল প্রদ্ধতিতে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। গ্যাস, কয়লা ও ফার্নেস অয়েল দিয়ে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। দেশে গ্যাসের সঙ্কট থাকায় এবং কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে খরচ বেশি হওয়ায় ফার্নেস অয়েল দিয়ে এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্লান্ট স্থাপনের সময় বর্জ্য পরিশোধন ও সংরণের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে ফার্নেস অয়েলের বর্জ্য প্লান্টের বাইরে জমা হচ্ছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণে এ বর্জ্য এলাকার ফসলি জমি এবং পাশের মিঠা ছড়া হয়ে চানখালী খালের পানির সাথে মিশে হালদা নদীতে পতিত হচ্ছে। এতে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। আর এ বর্জ্য গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার প্রবল বর্ষণে বিভিন্ন খাল ও ছড়া দিয়ে হালদা নদীতে পড়ছে। এখন পুরো হালদা নদীর পানি তৈলাক্ত হয়ে গেছে। হালদা নদীর পাড়ে ডিম সংগ্রহকারী শাহ আলম ও ফিরোজ এ দূষিত বর্জ্যরে কারণে নদীতে মাছের মড়ক দেখা দিয়েছে বলে জানান। ডিম ছাড়তে আসা মা মাছের তির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন জেলেরা। হালদা নদীতে গত ৮ এপ্রিল বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ডিম ছাড়ে। এখন ডিম আহরণকারীরা আহরিত ডিম থেকে রেণু ফোটাচ্ছে। কিন্তু নদীতে তৈলাক্ত বর্জ্য দেখা দেয়ায় ডিম আহরণকারীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। কারণ ডিম থেকে রেণু ফোটাতে প্রাকৃতিক শীতল পরিবেশের সাথে নদীর দূষণ মুক্ত পানি প্রয়োজন। এ ব্যাপারে জেলা মৎস্যকর্মকর্তা প্রভাতী দেবী সংবাদ পেয়ে বিষয়টি সরেজমিন প্রত্য করেছে বলে জানান। তিনি তৈলাক্ত পদার্থ হালদা নদীতে ভাসছে বলে স্বীকার করে এ ব্যাপারে পিকিং পাওয়ার প্লান্টের দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে একটি বিহিত করবেন বলে উল্লেখ করেন। হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এ তৈলাক্ত পদার্থ হালদা নদীর মা মাছের সীমাহীন তি করবে।এমনকি মা মাছ মারা যেতে পারে। তা ছাড়া মাছের পেটের ডিম নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন পরিবেশ রাকারী জলজ প্রাণীর জীবনহানি ঘটবে। হালদা নদীর পানি দিয়ে আহরিত ডিম ফোটানো যাবে না। আর ডিম ফোটানো গেলেও তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হালদা নদীতে বর্জ্য পড়ার বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ১১ মাইলস্থ পিকিং পাওয়ার প্লান্টের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বর্জ্য পড়ার কথা স্বীকার করেন।
Source : dailynayadiganta