English French German Italian Portuguese Russian Spanish

Related Articles

Search

Others

সোনাই দখল করে ভবন নির্মাণের কাজ ফের শুরু

Print

 

 

হাফিজুর রহমান, হবিগঞ্জ | তারিখ: ১৯-০৪-২০১৩

 

 

 

তীর থেকে সোনাই নদের দেড়-দুই শ ফুট ভেতরে ঢুকে মাটি ভরাট করে দশতলা ভবন তোলা হচ্ছে। হবিগঞ্জের মাধবপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে সোনাই নদ থেকে সম্প্রতি তোলা ছবি

 

 

 

 

 

ছয় মাস বন্ধ থাকার পর হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা সদরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে সোনাই নদ জায়গায় শিল্পপ্রতিষ্ঠান সায়হাম গ্রুপ আবারও ১০ তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই। সায়হাম গ্রুপ কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা তাদের নিজস্ব জায়গায় ভবনটি নির্মাণ করছে।


তবে পরিবেশবাদী সংগঠন বলছে, পয়স্তি ও শিকস্তি আইন অনুযায়ী ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে পরবর্তীকালে তা যদি ভূমিতে রূপান্তরিত হয়, তাতে আর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। সেই ভূমি হয়ে যায় সরকারের।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাস আগে এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) মুখে ভবনটির নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি ভবনের নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হয়েছে।


সরেজমিনে দেখা গেছে, পাড় থেকে নদের ভেতরে ১৫০ থেকে ২০০ ফুট জায়গা ভরাট করে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে বাঁকের সৃষ্টি হয়েছে। পাড়ে টাঙানো সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স’। ভবনের পাইলিংয়ের (ভিত্তি) কাজ শেষ। বর্তমানে শ্রমিকেরা পিলার তৈরির কাজ করছেন।


সায়হাম গ্রুপ কর্তৃপক্ষ জানায়, সোনাই নদ লাগোয়া তাদের তিন একর ভূমি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রশস্তকরণের সময় ৫৬ শতক ভূমি অধিগ্রহণ করে সরকার। বর্তমানে তাদের দুই একর ৪৪ শতক জমি রয়েছে। এ জমির ৪৫ শতাংশ জায়গাজুড়ে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ তলাবিশিষ্ট কমপ্লেক্সটি তৈরি করা হচ্ছে। আবাসন শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিশ্বাস বিল্ডার্স ভবনটির নির্মাণের কাজ করছে।


এলাকাবাসী জানান, সোনাই নদ উপজেলার মঙ্গলপুর, আফসলপুর, রাজাপুর, হরিষশ্যামা ও নোয়াগাঁও গ্রাম হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতবর্গ গ্রামে তিতাস নদীতে মিশেছে। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদী লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে জড়িত।


সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স ও সায়হাম গ্রুপ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক সৈয়দ মো. শাহজাহান বলেন, পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের পর প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে। তদন্তের প্রতিবেদন তাদের পক্ষে এসেছে।


নদের জায়গায় ভবন নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সফিউল্লাহ বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। শুনেছি, বিভিন্ন সময়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাপজোখ করে দেখা গেছে, স্থাপনাটি নদের জায়গায় পড়েনি। তার পরও যদি আবার অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে নতুন করে মাপজোখ করে দেখা হবে।’


মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন জাহান বলেন, ‘এ উপজেলায় দেড় বছর ধরে কাজ করছি। এটি নদী কি না আমার জানা নেই। এ ছাড়া এটি নদীর জায়গা হলেও আমার পূর্বে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা কিছুই করে যাননি। এখন আমার আর কিছু করার নেই।’


বাপার জাতীয় পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নদী দখল বা ভরাট করতে পারে না। এটি জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।


পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) হবিগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিম বলেন, ‘শিকস্তি আইন অনুযায়ী এ ভূমি প্রশাসনের। এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

 

 

 


 

 

 

Source: prothom-alo

 

 


 

 

 

 

 

 

 

 

মিঠামইনে হাটুরিয়া নদী শুকিয়ে ৫০টি সেচ স্কিম বন্ধ

Print

 

মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

 

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের উত্তর পাশে স্রোতস্বিনী হাটুরিয়া নদী এখন শুকিয়ে খেলার মাঠ। এ নদীর তীরে অন্তত ৫০টি সেচ স্কিম রয়েছে। এসব স্কিমের আওতায় ১০ হাজার হেক্টর বোরো জমি রয়েছে। পানির অভাবে এসব জমি ফেটে চৌচির। পানি সেচের ব্যবস্থা না থাকায় জমি পতিত থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা এতে হতাশ।


এছাড়া গত মাসে প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহে বীজতলা নষ্ট হয়ে পচে গেছে। সে জমি পরে রোপণ করতে পারছে না কৃষক। এ পরিস্থিতিতে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো জায়গায় নদী খনন করে নীজ উদ্যোগে পানি আনার চেষ্টা চলছে। সরকারিভাবে নদী খননের জন্য ৭ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ হয়েছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়। একটি মাত্র বোরো ফসল এ এলাকায়। যদি সময়মত জমিতে সেচ দিতে না পারে, তবে জমি পতিত থাকবে বলে কৃষক জানায়। অন্যদিক নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মালামাল পরিবহন বন্ধ থাকায়, সার-ডিজেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। হোসেনপুর স্কিম ম্যানেজার সালাম মিয়া জানান, নদীতে পানি না থাকায় সেচ কাজ বন্ধ রয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিংজুরী খালের মুখ খনন করে হাটুরিয়া নদীতে পানি আনার চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন চৌধুরী ও ঘাগড়া বাজার সেক্রেটারি রতন শিকদার, ইউপি সদস্য ফকরুল ইসলাম (খোকন) মিয়ার উদ্যোগে সব স্কিম ম্যানেজারদের নিয়ে বৈঠক করে প্রাথমিকভাবে স্কিম ম্যানেজারের কাছ থেকে তিন লক্ষাধিক টাকা আদায় করাসহ ঘাগড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নদী খননের বিষয়ে অর্থ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দুই সপ্তাহ ধরে তিন শতাধিক শ্রমিক শিংজুরী খাল কেটে হাটুরিয়া নদীতে পানি আনার চেষ্টা করছে।


ঘাগড়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক, রতন সিকদার জানান, নদী শুকিয়ে যাওয়ায় নৌপরিবহন ব্যবস্থা অচল। বাজারের মালামাল পরিবহন বন্ধ। ঘাগড়া বাজারে প্রায় ৩ শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছে। নৌপরিবহন বন্ধের কারণে ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আনতে পারছে না। এ কারণে জিনিসের মূল্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদী খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে স্কিম ম্যানেজারদের নিয়ে।

 

 


 

Source: amardeshonline

 


 

 

{jcomments on}

 

মাথাভাঙ্গা নদী মরা খালে পরিণত : মৎস সম্পদ বিলুপ্ত প্রায়, জেলেরা বেকার

Print

 

19th April, 2013

 

 

 

 

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে নুরুল আলম বাকু : চুয়াডাঙ্গা জেলার নদীর গতি যেমন বিচিত্র তেমনিতাৎপর্যপূর্ণ। পদ্মা নদীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শাখা চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রধান নদীমাথাভাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা সদর ও দামুড়হুদা উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিতহয়ে দামুড়হুদা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী গ্রাম সুলতানপুরের পাশ দিয়ে ভারতে প্রবেশকরেছে। এ নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিশাল একটি জনপদ। এই নদীকেঘিরেই একসময় এ বিশাল জনপদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নির্বাহ করতো তাদের জীবন-জীবিকা।বর্তমানে মৎস সম্পদ বিলুপ্ত প্রায়। বেকার হয়ে মানবেতর দিনযাপন করছেন জেলেরা। জানাগেছে, জন্মলগ্নে মাথাভাঙ্গা ছিল পদ্মার প্রধান শাখা। প্রায় ৪০০ বছর আগে গঙ্গা যখনভাগিরথী দিয়ে বয়ে যেত তখন নদীতল বালির পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেলে মাথাভাঙ্গাই প্রধানস্রোত বয়ে নিয়ে যেত। ১৮৭০ সালে ড. থমাস ওল্ড হ্যাম এশিয়াটিক সোসাইটির কার্যবিবরণীতেউল্লেখ করেছেন, ভাগিরথী ও ভৈরবের মধ্যবর্তী জায়গা কালক্রমে নদীবাহিত পলি দিয়ে ভরাটহয়ে যায়। ফলে গতিমাত্রা আরও কমে গিয়ে পদ্মা পূর্বদিকে সরে যায় এবং মাথাভাঙ্গারআবির্ভাব ঘটে। বিখ্যাত সেচ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম উইলকক্সের মতে মাথাভাঙ্গা সেচের জন্যকাটা খাল ছাড়া কিছুই নয়। অবিভক্ত ভারতের নদীয়া জেলার প্রধান তিনটি নদীর মধ্যেমাথাভাঙ্গা ছিল অন্যতম। মাথাভাঙ্গা নদীয়া জেলার নদী হিসেবেই পরিচিত। এ নদী একসময়খুব স্রোতস্বিনী ছিল। জনশ্রুতি আছে, বহু জনপদ গ্রাস করে মানুষের মাথা ভেঙে দিয়েছিলবলে এ নদীর নাম হয় মাথাভাঙ্গা। মতান্তরে উৎসমুখে মূল নদী পদ্মার সাথে সংযোগ নষ্টহয়ে যাওয়া অর্থাৎ মাথা বা মুখ ভেঙে যাওয়ায় এরূপ নামকরণ হয়েছে। তবে কোন এক সময় এনদীটি হাওলিয়া বা হাওলী নামে পরিচিত ছিল। ১৮৬২ সালে তৎকালীন পূর্ববাংলার সাথেকোলকাতার রেল যোগাযোগ চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত এই একমাত্র মাথাভাঙ্গা নদীপথেইকোলকাতার সাথে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ছিল। পদ্মা নদী থেকে জলাঙ্গী নদীর উৎপত্তি স্থলেরপ্রায় ১৭ কিলোমিটার ভাটিতে মাথাভাঙ্গা নদীর উৎপত্তি। চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গাউপজেলার হাটবোয়ালিয়া ও হাটুভাঙ্গা গ্রামের মাঝ দিয়ে মাথাভাঙ্গা নদী এ জেলায় প্রবেশকরেছে। প্রবেশ করে কিছুদূর আসার পর এ নদীর একটি শাখা বের হয়ে কুমার নদী নামেপূর্বদিকে বয়ে গেছে। মাথাভাঙ্গা আলমডাঙ্গা ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ২৬ ও দামুড়হুদাউপজেলার ১৫ গ্রাম পেরিয়ে দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম সুলতানপুরের পাশদিয়ে ভারতের নদীয়া জেলায় প্রবেশ করেছে। এর পর এ জেলার ১০-১২ গ্রাম পেরিয়ে ভাগিরথীরসাথে মিশে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। মাথাভাঙ্গা নদী ভারতে চুর্ণী নদী নামে পরিচিত। ১৭৭১সালে ইষ্টইন্ডিয়া কোম্পানি মিষ্টার রেনেলকে নদী জরিপ কাজে নিযুক্ত করেন। ১৭৮০ সালেরেনেলের মানচিত্র প্রকাশিত হয়। এতে গ্রীষ্মকালে মাথাভাঙ্গায় বড় নৌকা চলাচলে বিঘœ ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়। ১৭৯৫ সালে মাথাভাঙ্গা নদী জরিপ শেষে সংস্কার করেনৌ-বাণিজ্যের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়। ১৭৯৭ সাল পলিজ অবক্ষেপণের কারণে মাথাভাঙ্গারগভীরতা কমে যায়। ১৮১৩ সালে তৎকালীন সরকার মাথাভাঙ্গা সংস্কারের জন্য কর ধার্য করে।১৮১৯-২০ সালে জিকে রবিনসনকে মাথাভাঙ্গার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক ও কালেক্টর নিয়োগ করাহয়। অপরদিকে মাথাভাঙ্গার বিপদ হয়ে দাঁড়ায় তারই শাখা কুমার নদী। সেই সময় মাথাভাঙ্গারস্রোতের ৫ ভাগের ৪ ভাগ পানিই কুমার দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মাথাভাঙ্গা বিপদ ত্বরান্বিতহয়ে পড়ে। ১৮২৩ সালে প্রথমবারের মতো বঙ্গদেশে ১০ হাজার ৪০০ পাউন্ড ব্যয়ে গরুচালিতড্রেজিং মেশিন আনা হয়। কিন্তু সে বছর হঠাৎ মাথাভাঙ্গার গতি পরিবর্তন ঘটে। পরে ১৮৮১সালে মাথাভাঙ্গা হঠাৎ নাব্য হয়ে ওঠে। এতে করে পরিষ্কার বোঝা যায় এতদাঞ্চলের নদীরনাব্যতা গঙ্গা ও পদ্মার প্রবাহের উপর নির্ভরশীল।


১৯৬৮-১৯৬৯ সালে ভারত গঙ্গারউপর ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণ করে এবং ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল ভারত ফারাক্কা চালুকরার পরথেকেই অব্যাহতভাবে কমতে থাকে পদ্মার পানি প্রবাহ। তার প্রভাব পড়েমাথাভাঙ্গার উপরও। সেই থেকে মাথাভাঙ্গায় ক্রমান্বয়ে পানি প্রবাহ কমে গেলে পলি পড়েভরাট হতে থাকে নদীটির তলদেশ। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলার কারণে মাথাভাঙ্গা এখন মৃতপ্রায়হয়ে খালের আকার ধারণ করেছে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে নদীর পানি প্রবাহ এত কমে যায় যে কোনকোন জায়গায় পানি প্রবাহের উচ্চতা থাকে মাত্র হাটু সমান। অনায়াসে মানুষ হেঁটেই এ নদীপার হয়। বর্তমান সরকারের আমলে বেশ কয়েকবার এ নদী পুনঃ খননের কথা শোনা গেলেও আজপর্যন্ত তার কোন আলামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।


চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণঅধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, একসময় এ নদীর পানিই ছিল এ অঞ্চলের নদী তীরেরকৃষকদের সেচের একমাত্র অবলম্বন। পানি প্রবাহের অভাবে বছরের পর বছর পলি পড়ে নদীটিতার ঐতিহ্য হারিয়েছে। অন্যদিকে অনাবৃষ্টির কারনে চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকারকৃষি জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। মাথাভাঙ্গা নদীতে পানি না থাকার কারণে চুয়াডাঙ্গাজেলার ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে যন্ত্রচালিতসেচযন্ত্রেও পানি ঠিকমতো উঠছে না। কষ্ট করে কৃষকদের পানি তুলতে হচ্ছে। ফলেতুলনামূলকভাবে বেশি খরচ গুনতে হচ্ছে ফসল উৎপাদনে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমেযাওয়ায় খাল-বিল, পুকুর-ডোবা ও খাল-বিলে পানি থাকছে না। বর্তমানে নদীটি পুনঃখনন করাসময়ের দাবি। তাই এ অঞ্চলের মানুষের দাবি, এক সময়ের খরস্রোতা ও যৌবনবতী বর্তমানেমৃতপ্রায় এ নদীটি পুনঃখনন করে এর স্বাভাবিক স্রোতধারা চালু করে এ অঞ্চলের মানুষেরআর্থসামজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হোক।

 

 

 


 

 

Source: dailyinqilab

 

 


 

 

 

{jcomments on}

 

মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে যে নদী

Print

 

 

19th April, 2013

 

মো. তসলিম উদ্দিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

 

 

 

 

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে একদা খরসে াতা পাগলা নদী। খরসে াতের কারণেই হয়তো কেউ নদীটির নাম দিয়েছিল 'পাগলা'। কিন্তু বর্তমানে এই পাগলা নদীটি শান্ত রূপ ধারণ করেছে। শুধু শান্ত বললে ভুল হবে, ক্রমশ পানিশূন্য হয়ে প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে একদা সে াতস্বিনী পাগলা নদী। আর প্রকৃতির এই সর্বনাশের জন্য দায়ী কিছুসংখ্যক লোভী মানুষ।

পাগলা নদী দিয়ে এক সময় চলাচল করতো বড় বড় নৌকা। নদীতে ছিল প্রচুর দেশি প্রজাতির মাছ। এই নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিল রামচন্দ্রপুর হাটে বৃটিশদের নীলকুঠি। গড়ে উঠেছিল রামচন্দ্রপুর বাজার, কালিনগর বাজার, রাণীহাটি বাজার, শিবগঞ্জ বাজার, কানসাট বাজার। এসব বাজারে নৌকাযোগে ব্যবসায়ীরা মালামাল পরিবহন করতেন।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর এই পাগলা নদী ছিল শিবগঞ্জ উপজেলার প্রাণ। পাগলা নদীর তীরে অবস্থিত কানসাট ও তত্তিপুর হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত। প্রতিবছর মাঘী পুর্ণিমা উপলক্ষে তত্তিপুর ও কানসাটে গঙ্গাস্নান করতে আসতেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিপুলসংখ্যক মানুষ। আজও মানুষ এলেও নদীর পানি কমে যাওয়ায় আগতদের সংখ্যা অনেক হরাস পেয়েছে। কানসাটে রয়েছে জাহ্নমুনির আশ্রম। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদার কুঁজে রাজার কানসাট রাজবাড়ি এই পাগলা নদীর তীরেই অবস্থিত।

এই পাগলা নদী বর্তমানে প্রায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নে এই নদীর মোহনা থেকে উজানে শাহবাজপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার এই নদীর কিছু অংশে সামান্য পানি থাকলেও তাতে প্রবাহ নেই। নদীটি বদ্ধ হয়ে গেছে। রাজস্ব বিভাগ (ভূমি) লাগামহীনভাবে পাড় লিজ দেয়ার কারণে গোটা পাগলা নদীর দুই পাড়ে আবাদ হচ্ছে ধানসহ বিভিন্ন ফসল। অবৈধ দখলদাররা পাড় কেটে নদী ভরাট করে ফেলেছে। করছে ফসল আবাদ। কোথাও কোথাও নদীর পাড়ে ইটভাটা করে গ্রাস করছে পাগলা নদী। এসব কারণে নদীর পানি প্রবাহ প্রায় রুদ্ধ হয়ে গেছে।

নদীতে পানি কমে যাওয়ায় মহাবিপদে পড়েছেন নদী তীরবর্তী লাখ লাখ মানুষ। ঘোড়াপাখিয়া, রাণীহাটি, ছত্রাজিতপুর, নয়ালাভাঙ্গা, কানসাট, মনাকষা, শাহবাজপুর, দুর্লভপুর, উজিপুর ইউনিয়নবাসী ও শিবগঞ্জ পৌর এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণ পড়েছেন পানি সংকটে।

অনতিবিলম্বে লিজ দেয়া বন্ধ ও অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে নদীর জমি উদ্ধার করে নদীটি খনন করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার অধিকাংশ মানুষ। তাহলেই নদীতে পানি প্রবাহ আগের মতো নির্বিঘ্ন হবে, পাগলা নদীও আগের মতো খরসে াতা হয়ে নিজের নামের সার্থকতা প্রমাণ করতে পারবে।

 

 

 


 

 

Source: ittefaq

 

 


 

 

{jcomments on}

 

 

 

 

 

 

মাতামুহুরীর বুকে অসংখ্য বালুচর : বর্ষা মৌসুমে পাল্টে যায় চিত্র, আতঙ্কিত মানুষ

Print

 

 

Inqilab, 5th April, 2013

 

 

লামা (কক্সবাজার)উপজেলা সংবাদদাতা : মিয়ানমার ও দেশের পাহাড়ের পাদদেশ থেকে উৎপন্ন হয়ে আলীকদম, লামাও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে মাতামুহুরী নদী। বর্ষামৌসুমে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে এ জনপদে নষ্ট হয় বসতঘর, ফসল ও নদীর একূলওকূল। আরনদীর তীরের উপর দিয়ে প্রবাহিত পানির স্রোতে বিলীন হয়ে যায় হাজার হাজার বসতঘর।প্রতিবছরই একই চিত্র ঘটে। বর্ষাকাল এলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায়বসবাসকারী মানুষ।


বর্ষা মৌসুমে লামাখাল, বমুখাল ও চৈক্ষ্যংখালের চাইতে অনেকগুণবেশি হিংস্র হয়ে উঠে করালগ্রাসী মাতামুহুরী নদী। এমন একটা সময় ছিল পার্বত্য জেলাবান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলার সাথে সকল প্রকার ব্যবসা-বাণিজ্য হতো এ নদী দিয়ে।কিন্তু সেই ঐতিহ্য এখন আর নেই। দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কারবিহীন পড়ে থাকায় কালেরবিবর্তনে হারিয়ে গেছে সেই ঐতিহ্য। এসব এখন রূপকথার গল্পের মতোই মনে হয়। আগেকার দিনেসব ধরনের পাহাড়ি পণ্য ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ব্যবহায্য রসদ নদী দিয়ে নৌকা, ইঞ্জিন বোটও সাম্পানের মাধ্যমেই পরিবহন করা হতো। পর্যায়ক্রমে মাতামুহুরী নদীর নাব্যতা হ্রাস ওনদীতে ব্যাপকহারে চর জেগে উঠায় এই নৌপথ এখন অনেকটা অচল হওয়ার উপক্রম।


খোঁজ-খবরনিয়ে জানা যায়, মিয়ানমার ও দেশের পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সৃষ্ট এ মাতামুহুরী নদীররয়েছে একাধিক রূপ। বর্ষা মৌসুমে নদীর তীব্র আর্তনাদ তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরতমানুষকে অস্থির করে তুলে। নদীর তীরে বসবাসকারীরা প্রতি বছরই তাদের বাড়িঘর, ফসলি জমিহারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। এ পর্যন্ত কত হাজার মানুষ তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্বহয়েছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও এ সংখ্যা কম করে হলেও কয়েক হাজারের উপরেবলে মন্তব্য করেছেন প্রবীণ ব্যক্তিরা। আর শীত মৌসুমে মাতামুহুরীর বুকে ধু-ধুবালুচর। বালুচর দেখলে বোঝাই যাবে না বর্ষা মৌসুমে এত হিংস্র রূপ ধারণ করতে পারে এইনদী। সম্প্রতি মাতামুহুরী নদীর চিত্র সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, লামা পৌরসভা ওলামা সদর এবং রূপসী পাড়া ইউনিয়নের বাজারঘাট, চাম্পাতলী, পশ্চিমপাড়া, ছোটবমু, মেরাখোলা, বৈল্ল্যারচর, চুরাইয়ারবিল, নদীর বুকে জেগে কুরাইল্ল্যারটেক, লামামুখ, সাবেকবিলছড়ি, বৈদ্যভিটা, বালুরচরপাড়া, শিলেরতুয়া ও গজালিয়া ইউনিয়নে উঠা চরে টমেটো, বাদাম, মরিচসহ বিভিন্ন রকমের সবজির চাষ করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে শুরু হওয়ার আগেইঘরে উঠবে ফসল। বর্ষা মৌসুম শুরু হলে সম্পূর্ণ রূপে পাল্টে যাবে এ নদীর চিত্র। প্রবলস্রোতের গর্জনে ভীত করে তুলবে তীরে বসবাসকারীদের।


জানা যায়, মানুষের বসতঘরছাড়াও স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও মন্দির রক্ষা পায়নি মাতামুহুরী নদীর ভাঙন থেকে।বর্তমানে পৌর এলাকার একটি প্রাইমারি স্কুল, ৫০টির মতো সড়ক মারাত্মক হুমকির মুখেরয়েছে। আগামী বর্ষার আগেই যদি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে ওই স্কুল ওসড়কগুলো রক্ষা করা যাবে না। এছাড়াও শত শত বসতঘর রয়েছে হুমকির মুখে। এদিকেমাতামুহুরীর নদীর পানি শুকিয়ে অসংখ্য চর উঠে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছে শত শত জেলে।আয়ের একমাত্র মাধ্যম মাতামুহুরী নদীর পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে বেকার হয়ে পড়েছেতারা। এ ব্যাপারে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, লামা ও আলীকদমউপজেলায় অব্যাহতভাবে বৃক্ষ নিধন, পাথর উত্তোলন, পাহাড় কাটা, তামাক চাষ ও জুম চাষসহবর্ষা মৌসুমে ভূমি ধসের কারণে মাতামুহুরী নদীর নাব্যতা হ্রাস পেতে বসেছে। তার কারণেনদীর বুকে অসংখ্য বিশাল বিশাল বালুচর জেগে উঠেছে। এখন নদীতে পানি তেমন না থাকায়নৌকাযোগে যাতায়াতকারীরা চলাচলে ভীষণ কষ্টের মধ্যে রয়েছে। এ সমস্যাগুলো সরকারিভাবেযদি বন্ধ করা না হয় তাহলে মাতামুহুরী নদী সম্পূর্ণরূপে ভারাট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনারয়েছে।

 

 

 


 

 

Source: dailyinqilab

 

 


 

 

 

{jcomments on}

 

Page 1 of 3

<< Start < Prev 1 2 3 Next > End >>
| + - | RTL - LTR