লেখক: নওগাঁ প্রতিনিধি | রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১২, ৩০ মাঘ ১৪১৮
বরেন্দ্র নওগাঁর নৌচলাচল ও নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। সেচ ও পানীয় জল সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। পানির স্তর খুবই নিচে। জনস্বাস্থ্য বিভাগ নলকূপ ছেড়ে এখন মান্ধাতাকালের পাতকুয়ায় (রিংকূপ) ফিরে গেছে। নদী, খাল-বিল প্রভৃতিতে পানি না থাকার দরুন প্রতিবছর এমন দুঃসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বরেন্দ্র ভূমি নওগাঁ জেলায় নদী ও খাল-বিলগুলো প্রতিবছরই খরা মওসুম শুরুর আগেই শুকিয়ে যায়। এক্ষুণি সারাজেলার বড় বড় নদী, খাল-বিলের পানি দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে জলপথে নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জেলার জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আলী আজগরের সূত্রে জানা গেছে, জেলার এসব জলাধার শুকিয়ে পড়ায় চরম প্রভাব পড়ে ভূ-গর্ভস্থ ওয়াটার টেবিলে।
জেলার বড় বড় নদী আত্রাই, যমুনা, পুনর্ভবা ছাড়াও জবই, গুটা, মনসুর, দিঘলী, রক্তদহ প্রভৃতি বিল শুকিয়ে খটখট করে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরে এর চরম প্রভাব পড়ে। এগুলো মজে ওঠায় যেমন বর্ষাকালে নদী-বিল পানি ধরে রাখতে পারে না, তেমনি খরা শুরু হবার আগেই শুকিয়ে যায়। একে তো বরেন্দ্র এলাকা, দ্বিতীয়ত, ভূ-পৃষ্ঠের জলাধারগুলো শুকিয়ে পড়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নেমে যায়।
এতে একদিকে বর্ষাকালে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ফসল, রাস্তাঘাট ও বাড়ি-ঘরের ক্ষতি করে। অন্যদিকে খরাকালে সেচ সুবিধাসহ পানীয় জলের কষ্টে মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহায়। মানুষের কষ্ট বিড়ম্বনা লাঘবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানান, নদী, খাল-বিল বাঁচাতে দ্রুত এগুলোর খনন ও সংস্কার জরুরী। জনস্বাস্থ্য বিভাগ জেলার ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র এলাকার সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর প্রভৃতি উপজেলার পানি স্তর দেড়শ’ থেকে ২শ’ ফিট নিচে নেমে যায়, টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যায় না।
২০১০-১১ সালে এসব এলাকার ওয়াটার টেবিল ৪৫ থেকে ৫০ মিটার নিচে নামে। এছাড়া এসব এলাকায় পানি ধরে রাখার বালিস্তর পাওয়া যায় না। উল্টো সর্বত্র কেবল পাথরের স্তর। ফলে গভীর নলকূপও হচ্ছে না এসব এলাকায়। সে কারণে জনস্বাস্থ্য বিভাগ পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর উপজেলাগুলোর কিছু কিছু এলাকায় টিউবওয়েল না বসিয়ে সাবেককালের পাতকুয়া দেয়া শুরু করেছে।
Source : Ittefaq