বিষাক্ত বর্জ্যে মৃত্যপ্রায় বহ্মপুত্র
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা এক সময়ের খরস্রোতা নদী এখন প্রায় মৃত। এই নদীর বুকজুড়ে ছিল মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর বাস। অসাধু কিছু ডাইং ব্যবসায়ীদের কারণে এই নদীতে মাছ থাকা দূরের কথা। জানা গেছে, বজর্্যজনিত কারণে নদীর দুইপাড়ে বসবাসকারীরা নানা রোগে আক্রানত্দ হচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীদের আশংকা প্রকাশ করে বলেছেন, দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যে কলকারখানার বজর্্য পরিশোধন করে ফেলতে হয় । কিন্তু এই এলাকায় সব কলকারখানার বজর্্য সরাসরি নদীর পানিতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। সোনারগাঁ, আড়ইহাজার ও নরসিংদী মাধবদীর কিছু অংশ বিসত্দীর্ণ এলাকার বিভিন্ন কারখারনার বজর্্য প্রতিদিন হাজার হাজার টন অপরিশোধিত বিভিন্ন ডাইংয়ের ঐচ্ছিক রং এই নদীতে অনায়াসে ছেড়ে দিচ্ছে। এতে একদিকে যেমন ক্ষতি হচ্ছে পানির অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন জলজপ্রাণী। পানির অপর নাম জীবন হলেও এই নদীর পানি জীবনের জন্য মরন। আমাদের দেশে পানি এক ধরনের সম্পদ হলেও এই নদীর পানি এলাকার মানুষের জন্য বিপজ্জনক। উক্ত এলাকার বাসিন্দা কৃষক নুরু মিয়া জানান, আমরা এই নদীর পানি দিয়ে বিভিন্ন কৃষি কাজ করতাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই নদীর পানি বর্তমানে আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। পানি শরীরে লাগলে সঙ্গে সঙ্গে চুলকানি শুরু হয়। নাকে মুখে চেপে ধরে নদীর পাশ দিয়ে হাটতে হয় । হোরগাও এলাকার বাসিন্দা মো. কুতুবউদ্দিন জানান, এই এলাকার নদীর মাছ আমাদের এলাকায় বিপুল জনগোষ্ঠির আমিষের চাহিদা পূরণ করতো। তিনি জানান, গত কয়েকদিন আগে বেশ কয়েক মাছ ধরা পড়ে জেলের জালে। কিন্তু মাছ দেখতে অনেক কালো।
মাছের গায়ে দুর্গন্ধ। তিনিও এলাকার অসাধু ডাইং ব্যবসায়ীদের দায়ী করলেন। কালিবাড়ি এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী মো. মোকারম মিয়া জানান, এই নদীর নাব্যতা নাই বললেই চলে । কচুরি পানায় ভরে গেছে নদী। নদীর দুইপাশে গড়ে উঠা বিভিন্ন ডাইং কারখানার মালিকরা ধীরে ধীরে নদীর দুইপাশ দখল করে নিয়েছে। যার কারণে নদীতে কোনো স্রোত নেই । এই নদীর পানি বর্ষা মৌসুম এলে এলাকার কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি করে। নদীর বিষাক্ত পানি জমিতে ছড়িয়ে ফসলের ক্ষতি করে। কৃষক মো. আমান মিয়া জানান, এই এলাকায় অনেকেই ফসল করা ছেড়ে দিয়েছে। কারণ হিসেবে তিনিও নদীর বিষাক্ত পানির কথা বললেন। আড়াইহাজার উপজেলার পরিবেশ অধিপ্তরের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানান, ডাইং মালিকরা আমাদের চেয়ে শক্তিশালী। আমাদের ঊধর্্বতন কর্মকর্তাদের খুব সহজেই ম্যানেজ করে ফেলে। এলাকাবাসীর আবেদন এই নদীকে বাঁচানোর জন্য সংশিস্নষ্ট কতর্ৃপক্ষ ব্যবস্থা নেন।
Source : Amder Shomoy