English French German Italian Portuguese Russian Spanish

Related Articles

Search

করোতোয়া Karotoa

অবৈধ দখলে হারিয়ে যাচ্ছে করতোয়া

Print

মিলন রহমান, বগুড়া | তারিখ: ১৬-০২-২০১২{jcomments on}

বগুড়া শহরে অবৈধ দখলদারদের থাবায় করতোয়া নদী এভাবে তার প্রশস্ততা হারাচ্ছে। ছবিটি গত রোববার বগু�

বগুড়া শহরে অবৈধ দখলদারদের থাবায় করতোয়া নদী এভাবে তার প্রশস্ততা হারাচ্ছে। ছবিটি গত রোববার বগুড়ার টিএমএসএস মহিলা মার্কেটের কাছ থেকে তোলা

সোয়েল রানা

খরস্রোতা করতোয়া নদী হারিয়ে যেতে বসেছে। অবৈধ দখলদারদের কবজায় চলে গেছে নদীর অনেক জায়গা। আদালতে মামলা চলছে। এই সুযোগে করতোয়ার বুকে উঠছে আরও নতুন ভবন। সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তরে মাটিডালি থেকে বেজোড়া পর্যন্ত শহরের মধ্যে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর দুই পাশের জায়গা দখল হয়ে গেছে। শহরের ফুলবাড়ী থেকে চেলোপাড়া হয়ে মালতিনগর পর্যন্ত বড় বড় স্থাপনা গড়ে উঠেছে। চিকিৎসাকেন্দ্র, বিপণিবিতান, কারখানা, বসতবাড়িসহ বহু স্থাপনা গড়ে উঠেছে। দখলের কারণে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় এটি এখন সরু ও পচা নর্দমায় পরিণত হয়েছে। নোংরা পানিতে অনেকেই গোসল ও কাপড় ধোয়ার কাজ করছেন। এতে স্বাস্থ্যহানির শিকার শতাধিক পরিবার। জেলা প্রশাসন করতোয়া নদীকে বাঁচাতে দূষণকারী প্রতিষ্ঠান ও দখলকারী ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ১৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে তলব করেছে ২০১০ সালে। তারও কোনো অগ্রগতি নেই। নদীপাড়ের পুরোনো বাসিন্দাদের অনেকে বলেন, করতোয়াপাড়ে শহর-বন্দর গড়ে ওঠায় বেড়ে গেছে জমির দাম। আর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চোখ পড়েছে নদীর জমির ওপর। সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কে জি এম ফারুক অভিযোগ করেন, করতোয়া দখলমুক্ত করতে এ রকম উদ্যোগ এর আগে নেওয়া হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। তিনি নদী দখলমুক্ত করা, সংস্কার ও খননের তালিকায় করতোয়া নদী অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শহরের ভেতরে ১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান করতোয়া নদীর দুই তীরের প্রায় সাড়ে ২২ শতাংশ জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। নাটাই, চেলোপাড়া ও সূত্রাপুর নামে তিনটি মৌজায় অবৈধভাবে দখল করা স্থাপনাগুলো সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে তারা আদালতের আশ্রয় নেয়। বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। চেলোপাড়ার কাছে গোপীনাথ মন্দিরের পাশে নদী দখলের বিষয়ে মন্দির কমিটির সভাপতি আনন্দ কুমার দাস বলেন, ‘তাদের জায়গায় স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে পৌরসভার লোকজন এসে মেপে গেছেন। তাতে মাত্র দেড় হাত জায়গা রয়েছে নদীর। যদি এ জায়গা ছেড়ে দিতে হয়, আমরা ছেড়ে দিতে রাজি আছি।’ এর পাশেই গড়ে উঠেছে টিএমএসএস মার্কেট। সেখানেও তারা নদী দখল করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই বিপণিবিতানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ববিতা রানী বর্মণ জানান, জমির দলিল দেখে তাঁরা এখানে বিপণিবিতান নির্মাণ করেছেন। নদীর জায়গা দখল করা হয়নি। বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবর রহমান বলেন, বেশ কয়েকবার নোটিশ দিয়ে নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা হয়েছে। আবার কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুলতান আবদুল হামিদ জানান, আদালতে মামলা থাকায় তাঁরা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। পরিবেশ নিয়ে কাজ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন স্বপ্ন। এর নির্বাহী পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, একমাত্র গণসচেতনতার মাধ্যমে করতোয়া নদীকে তার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া যাবে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সব পেশাজীবীকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।

 

 

 

Source : Prothom Alo

 

 


 

 
| + - | RTL - LTR