English French German Italian Portuguese Russian Spanish

Related Articles

Search

Food

রাসায়নিকের বিষাক্ত ছোবল ॥ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি

Print

 

বিষাক্ত ফল খেয়েই ১২ শিশুর মৃত্যু ০ বিষাক্ত সাইক্লোমেটে টোস্ট বিস্কুট, কার্বাইডে পাকানো হচ্ছে ফল, ফরমালিন দেয়া মাছ-সবজিতে

 
শাহীন রহমান ॥ গত জুন মাসে দিনাজপুরে বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকদিনের ব্যবধানে ১২ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। এদের বেশিরভাগের বয়স ছিল ২ থেকে ১২ বছর। এসব শিশুর শরীরের বিভিন্ন নমুনা নিয়ে মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পায় এসব শিশু বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। পরীক্ষায় তারা আরও নিশ্চিত হন যে রাজশাহী এলাকায় এ সব শিশু মৌসুমী বিষাক্ত ফল খেয়ে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর শিকার হয়েছে। বিশেষ করে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত লিচু খেয়েই ১২ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এবার রাজশাহী অঞ্চলে আম ও লিচুর বাম্পার ফলন হয়। পোকামাকড় হাত থেকে রক্ষা ও ফল সংরক্ষণের জন্য মেশানো হচ্ছে মাত্রারিক্ত কেমিক্যাল। এভাবে খাদ্যদ্রব্যে কেমিক্যাল মেশানোর কারণে তা বিষে পরিণত হচ্ছে। আর এ বিষাক্ত খাবার খেয়েই মানুষ আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। বিষ মেশানো লিচু খেয়ে শিশুরা দ্রুত আক্রান্ত হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স্করা আস্তে আস্তে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে তারা লিভার অকেজো, কিডনি নষ্ট ও ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। সারাদেশেই এভাবে বিভিন্ন ফল-ফসলে বেপরোয়াভাবে বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে হরহামেশাই। এসব কীটনাশক বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় মানুষের শরীরে প্রবেশ করে অনেককে তাৎক্ষণিকভাবে আবার অনেককে নীরবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে মানুষ তার নিজের অজান্তেই এভাবে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এসব রাসায়নিক মিশ্রিত ভেজাল খাদ্য গ্রহণ করছে। আক্রান্ত হচ্ছে মারাত্মক রোগ-ব্যাধিতে। সম্প্রতি বছরগুলোতে ক্যান্সারসহ কিছু মারাত্মক রোগে আক্রান্তের ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে খাদ্যের এই ভেজালই প্রধান কারণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এই ভেজালের কারণেও দেশের মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশে এখন মানুষের নিরাপদ খাবারের সঙ্কট বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কোন খাবারই নিরাপদ নয় বললেই চলে। বিশেষজ্ঞরাই বলছেন, প্রায় সব খাবারেই কোন না কোনভাবে মিশে যাচ্ছে বিষ। নানা কৌশলে খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। খাদ্যে এসব রাসায়নিক পরীক্ষার পরীক্ষাগার ও পরীক্ষা উপকরণ না থাকার কারণে ভেজাল শনাক্তও করা যাচ্ছে না। আবার ছোটখাটো পরীক্ষার জন্যও সময় লাগছে। কিছু খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল শনাক্ত করা গেলেও আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত ফুড কোর্ট বা খাদ্য আদালত না থাকার কারণে এবং সাধারণ আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে ভেজালকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। ভেজালের বিরুদ্ধে কার্যকর অভিযান না থাকায়ও ভেজালের প্রকোপ বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকাশিত বুলেটিনে দেখানো হয়েছে ভোগ্যপণ্যের প্রায় ৪৮ ভাগই ভেজাল। মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে রাজধানীসহ সারাদেশ থেকে পাঠানো নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ভোগ্যপণ্যের প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ শতকরা ৪৮ ভাগই ভেজাল। ২০১০ সালেই কেবল ভেজাল নমুনার শতকরা হার ছিল ৫২ ভাগ। স্বাস্থ্য বুলেটিনে দেখা গেছে, ২০০১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ল্যাবরেটরিতে মোট ৫৩ হাজার ৪২টি খাদ্যপণ্যের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৫ হাজার ১৫৭টিই ছিল ভেজাল। ২০০১ সালে ৩ হাজার ২৮০টি নমুনার মধ্যে ১ হাজার ৫৮৮টি, ২০০২ সালে ৪ হাজার ৩শ’টির মধ্যে ২ হাজার ১৯০টি, ২০০৩ সালে ৫ হাজার ১২০টির মধ্যে ২ হাজার ৬০৫টি, ২০০৪ সালে ৪ হাজার ৪১৩টির মধ্যে ২ হাজার ১১৯টি, ২০০৫ সালে ৬ হাজার ৩৩৭টির মধ্যে ৩ হাজার ১৩৭টি, ২০০৬ সালে ২ হাজার ৭৭৯টির মধ্যে ১ হাজার ৩৭৪টি, ২০০৭ সালে ৫ হাজার ২৯৯টির মধ্যে ২ হাজার ৫০৪টি, ২০০৮ সালে ৮ হাজার ৪৩৪টির মধ্যে ৩ হাজার ৬৬৮টি, ২০০৯ সালে ৬ হাজার ৩৩৮টির মধ্যে ২ হাজার ৯৮২টি এবং ২০১০ সালে ৫ হাজার ৭৭৯ টির মধ্যে ২ হাজার ৯৯০টির নমুনায় ভেজাল শনাক্ত হয়। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট অব ফুড সায়েন্স টেকনোলজির এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে দেশের বছরের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার গুঁড়া মসলা বিক্রি হয়। কিন্তু অতি মুনাফালোভী চক্র গুঁড়া মসলায় মেশাচ্ছে ইট কাঠ, ভুট্টা, চালেরগুঁড়া ফিটকিরিসহ ক্ষতিকর বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ। এ ছাড়া কাঁচা আম পাকাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সোডিয়াম কার্বাইড, ফলের রসে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ সোডিয়াম সাইক্লোমেট, কাপড়ের রং, সাইটিক এ্যাসিড ও প্রিজারভেটিভ। এ ছাড়া সায়েন্স ল্যাবসহ বিভিন্ন ল্যাবেরেটরিতে খাদ্যের মান পরীক্ষা করে খাদ্যে ভেজাল ও নিম্ন মানের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এভাবে খাদ্যে ভেজাল ক্রমেই যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা ও শনাক্তকরণের উপকরণ না থাকা, ভেজাল উপকরণের সহজলভ্যতা, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকা এবং ত্রুটিপূর্ণ ভেজালবিরোধী অভিযানের কারণেই ভেজাল ঠেকানো যাচ্ছে না মনে করছেন সংশ্লিরা। মোবাইল কোর্টে তাৎক্ষণিকভাবে ভেজাল চিহ্নিত করে সাজা দেয়ার ঘটনা ঘটলেও ভেজাল প্রতিরোধে তা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না। দেখা গেছে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ভেজালের সঙ্গে জড়িত তাদের এখনও সরাসরি শাস্তির আওতায় আনান সম্ভব হয়নি। বিগত কয়েক বছরের ভেজালবিরোধী অভিযানে যাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে তারা সবাই কোন না কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। ভেজালের অভিযানে আগেই সুযোগ বুঝে মালিক পালিয়ে যায়। ফলে এর দায় বহন করতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের। মালিক সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। এভাবে ভেজালের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মালিকদের শাস্তি না হওয়ায় সুযোগ বুঝে তারা আবার নতুন করে ভেজালের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এ কারণে খাদ্যে ভেজাল ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা ও শনাক্তকরণের উপকরণ না থাকা, ভেজাল উপকরণের সহজলভ্যতা, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকা এবং ত্রুটিপূর্ণ ভেজালবিরোধী অভিযানের কারণেই ভেজাল ঠেকানো যাচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবার সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিষাক্ত সাইক্লোমেট দিয়ে তৈরি হচ্ছে টোস্ট বিস্কুট, বিষাক্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে পাকানো হচ্ছে আম, কলা, আনারস। রুটি, বিস্কুট, সেমাই তৈরি করা হচ্ছে বিষাক্ত উপকরণ দিয়ে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে। ফরমালিন দেয়া হচ্ছে মাছ সবজিতে, মবিল দিয়ে ভাজা হচ্ছে চানাচুর, হাইড্রোজ মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে মুড়ি ও জিলাপি। এ ছাড়া ক্ষতিকর রং দেয়া ডাল, ডালডা ও অপরিশোধিত পাম অয়েলমিশ্রিত সয়াবিন তেল, ভেজাল দেয়া সরিষার তেল, রং ও ভেজালমিশ্রিত ঘি, পাম অয়েলমিশ্রিত কনডেন্সড মিল্ক, ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি প্যাকেটজাত জুস, মিনারেল ওয়াটার, মরা মুরগির মাংসও অবাধে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এসব দেখার কেউ নেই। এ ছাড়াও টেক্সটাইল রং মেশানো হচ্ছে বেকারি পণ্য, জুসসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যে। তেল, ঘি, আইসক্রিম, মিষ্টি, দই, ললিপপ, চকোলেট, কেক ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্যেও ক্ষতিকর রং, ফ্লেভার ব্যবহার করা হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের ব্যবহার, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্যপণ্য তৈরি, হোটেল-রেস্টুরেন্টে বাসি, মরা মুরগি, গরু, মহিষ, ছাগলের গোশত খাওয়ানোর ঘটনাও ঘটছে। আবার মিনারেল ওয়াটারের নামে ওয়াসার পানি বোতলজাত করে বাজারজাতকরণের ঘটনাও ঘটছে। বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক মানসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যপণ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে বলেন, মানবদেহের বৃদ্ধি এবং পরিচালনার জন্য খাদ্য আবশ্যকীয় উপাদান। খাদ্য দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। তবে এ খাদ্য হওয়া চাই নিরাপদ ও মানসম্পন্ন। তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণের জন্য ফসল উৎপাদনের শুরু থেকে খাবার গ্রহণ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে গুণগত মান রক্ষা করা একান্ত আবশ্যক। কারণ যে কোন স্তরে খাদ্যের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। খাদ্য যে সকল প্রক্রিয়ায় উৎপাদন করা হয় সেখান থেকে কোন প্রকার দূষণ বিষক্রিয়া আক্রান্ত না হয় তারও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। খাদ্যে অনাকাক্সিক্ষত ও অতিমাত্রার কেমিক্যাল ব্যবহার করলে তা দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
 
 
 
 

রংপুরে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে সেমাই

Print

 

লেখক: রংপুরপ্রতিনিধি | সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১২, ১৫ শ্রাবণ ১৪১৯

Details

পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রংপুরে নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। প্রকাশ, রংপুরের তৈরিকৃত সেমাইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকায় তা দেশের বিভিন্ন স্থানেও বেশ ভালো চলে। কিন্তু সেমাইয়ের চাকচিক্য ও সৌন্দর্য বাড়াতে এতে ব্যবহার করা হচ্ছে অপরিশোধিত পাম অয়েল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল ‘টল্যু’। পশুর চর্বি থেকে তৈরি ‘টল্যু’ সাধারণত সাবান তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চিকিত্সকরা একে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ‘স্লো পয়জন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ব্যবসায়ীরা বিএসটিআই এবং জেলা স্যানেটারি পরিদর্শক কার্যালয়ের এক শ্রেণীর কর্মকর্তাকে বকশিস দিয়ে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব সেমাই তৈরি ও বাজারজাত করার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এজন্য ব্যবসায়ীরা একটি সিন্ডিকেটও গঠন করেছেন। এদিকে এখন পর্যন্ত বিএসটিআই ভেজাল বিরোধী অভিযানও শুরু করেনি। প্রকাশ, আলমনগর, বাবুপাড়া, শালবন, মুলাটোল, সিওবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার অলিতে-গলিতে গড়ে ওঠা প্রায় ১শ’ ৫০টি কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে পুরোদমে চলছে সেমাই তৈরির কাজ। এসব কারখানার না আছে বিএসটিআই’র অনুমোদন না আছে পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স। মাত্র ১০টি কারখানার বিএসটিআই’র অনুমোদন রয়েছে।

রমজান মাসে শহর ও জেলার হাট-বাজারে যেসব খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হয়ে থাকে তার সিংহভাগই আলমনগর ও বাবুপাড়ায় তৈরি। একেকটি কারখানায় দৈনিক গড়ে ২৫ থেকে ৩০ মণ সেমাই তৈরি হয়ে থাকে। পাইকারী দরে প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। দোকানীরা তা বিক্রি করছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে। ময়দা, তেল ও খড়ির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার সেমাইর দাম দ্বিগুণ। গত বছর কিছু কিছু কারখানায় খোলা আকাশের নিচে সেমাই শুকানো হলেও মোবাইল কোর্টের ভয়ে এবার তা না করে মেশিনেই সেমাই শুকানো হয়। এসব সেমাই কেমিক্যাল বিহীন স্বাস্থ্যসম্মত বলেও দাবি করেন তারা। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ জাকির হোসেন জানান, পশুর চর্বি থেকে তৈরি ‘টল্যু’ দিয়ে তৈরি করা সেমাই খেলে কিডনি এবং যকৃতে বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। হজমশক্তি কমে যায়। রক্তশূন্যতা ও পুষ্টিহীনতাসহ চর্ম রোগ দেখা দেয়। এর ফলে মানুষ অকালে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়।{jcomments on}

 

 

Source : Ittefaq

 

নকল সেমাই ওতেল উদ্ধারআটক ৩

Print

 

লেখক: ত্রিশাল(ময়মনসিংহ)সংবাদদাতা | শুক্রবার, ৩ অগাষ্টu-এ ২০১২, ১৯ শ্রাবণ ১৪১৯

Details

ময়মনসিংহের ত্রিশালে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল সেমাই ও তেল উদ্ধার করেছে। এর সাথে জড়িত ৩ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। জানা যায়, বৃহস্পতিবার এ এস আই শামীমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের ভাটিদাস পাড়া নেংড়ার বাজারে নকল বর্নফুল লাচ্ছা সেমাই ও আল আমিন সয়াবিন তেল প্যাকেটজাতকরণের একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার প্যাকেটসহ কয়েক মণ নকল লাচ্ছা সেমাই ও কয়েক শ’ বোতলসহ একড্রাম ও ২৫ টিন সয়াবিন তেল আটক করে। এর সাথে জড়িত মালিক আল আমিন (২৮), ছাইফুল ইসলাম (৩৫) ও হুমায়ুন কবীর (২৭) কে আটক করে।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এরা বিভিন্ন জায়গা থেকে নিম্নমানের সেমাই সংগ্রহ করে বনফুলের প্যাকেট নকল করে বর্নফুল নামকরণ করে ও নিম্নমানের তেল সংগ্রহ করে আল আমিন নামে প্যাকেটজাত করে ভোক্তা ও জন সাধারণকে প্রতারণার মাধ্যমে বাজারজাত করে আসছে।{jcomments on}

 

 

Source : ittefaq

 

বরেন্দ্র অঞ্চলে বাড়ছে কৃষি ব্যয় উৎপাদন কমেছে ১৫ শতাংশ

Print

 

জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবরাজশাহী অফিস জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলে চলতি বছর বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি কম হওয়ায় আমন ধানের উৎপাদন ১৫ শতাংশ কমে গেছে। বেড়ে গেছে কৃষিতে খরচ। অতিরিক্ত ব্যয় ও উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহীর পানি বিজ্ঞান বিভাগের সূত্রমতে, এবার রাজশাহী অঞ্চলে গড়ে প্রায় ৬০ ভাগ বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। গত বছর রাজশাহীতে ১ হাজার ৬৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। অথচ চলতি বছরের ৮ মাসে ৭৯০.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি বৃষ্টিহীন, মার্চ ৬.৫, এপ্রিল ১১৯, মে ৪, জুন ১৭৬, জুলাই ২৭৩ ও আগস্টে ২১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ২০১১ সালের প্রথম ৮ মাসে রাজশাহীতে ১৪৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। সূত্রমতে, ২০০৪ সালে ১ হাজার ৬৬০ মিলিমিটার, ২০০৫ সালে ১৩১.৫ মিলিমিটার, ২০০৬ সালে ১ হাজার ৪০ মিলিমিটার ২০০৭ সালে ২ হাজার ৪২ মিলিমিটার, ২০০৮ সালে ১ হাজার ২৬৯ মিলিমিটার, ২০০৯ সালে ৯৬১ মিলিমিটার এবং ২০১০ সালে ৮৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। উষ্ণতা বৃদ্ধি, বাতাসে কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, বন ও গাছপালা উজাড়, সর্বোপরি বাতাসে মেঘ ঘনীভূত না হওয়ার কারণে রাজশাহী অঞ্চলে এ বছর বৃষ্টিপাত অনেক কম হয়েছে। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটছে। বিশেষ করে আমন আবাদ এবার সেচ সঙ্কট হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অনেক চাষী আমন চাষে উৎসাহ হারাচ্ছে। এ বছর পাট জাগ দিতেও সেচ দিতে হয়েছে। এছাড়া পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বৃষ্টি উদ্বেগজনক হারে কমে যাওয়ায় খাল বিল, পুকুর জলাশয়ে পানি ঠিকমত রিচার্জ হচ্ছে না। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কমে যাচ্ছে মৎস্য সম্পদ। জেলেরা জানায়, তাদের দুর্দিন বাড়ছে। মাছের উৎপাদন কমছে। বেড়ে যাচ্ছে মাছের দাম। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, রাজশাহী অঞ্চলে উষ্ণতা বেড়েই চলেছে। চলতি বছর বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে অর্থাৎ এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪ জুন রাজশাহীতে এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী অঞ্চলে গড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২.৩ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষক মধ্য জুলাইয়ে বৃষ্টির অভাবে যথাসময়ে ধান রোপণ করতে পারেনি। পানির অভাবে মাঠের পর মাঠ জমি অনাবাদি রয়েছে। এবার আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ শতাংশ কমে গেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় খোদ কৃষি বিভাগ ও বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রায় ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ২৪ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার বর্ষা মৌসুমে তুলনামূলক কম বৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলায় এবার আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ শতাংশ কমে গেছে। বর্ষায় ভরা মৌসুম মে-জুন মাসে উপজেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬১ মিলিমিটার ছিল। এছাড়া জুূলাই মাসে জেলায় ২৯২ মিলিমিটার, আগস্ট মাসে ৭০ মিলিমিটার ও সেপ্টেম্বরে ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৮৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত কম। মহিশাল বাড়ির কৃষক আবুল কাশেম জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে বৃষ্টির পানিতেই আমন আবাদ করে আসছেন। অথচ এখন সেচ নির্ভর হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, তার ২ বিঘা জমিতে এবার সেচসহ আমন আবাদে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধান আবাদ করে খাটুনির দামই উঠছে না। কৃষকের দুর্দশা কমাতে ধানের নূ্যনতম দাম ১ হাজার টাকা মণ হওয়া উচিৎ। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গোদাগাড়ীর অঞ্চলের উপসহকারী প্রকৌশলী মুনজুর হোসেন জানান, এবার এ এলাকায় বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। কৃষক যেন সেচ সঙ্কটে না পড়ে, সেজন্য বিএমডিএ সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।

 

 

 

Source: Jay Jay Din

 

এই মাংস খাচ্ছি আমরা!

Print
 
| + - | RTL - LTR