English French German Italian Portuguese Russian Spanish

Related Articles

Search

Tipaimukh

টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ মানবাধিকারের লঙ্ঘন

Print

ড. মিজানুর রহমান বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মিজানুর রহমান বলেছেন, ভারত টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ করলে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হবে। এটা সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত 'জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা' বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। {jcomments on}

ড. মিজান বলেন, এই বাঁধ নির্মাণের ফলে ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। এতে কৃষক-জেলেসহ লাখ লাখ মানুষ চরম দুর্যোগের মধ্যে পড়বে। তাদের পেশা পরিবর্তন করতে হবে। এমনকি এই বিপর্যয় থেকে ভারতের নাগরিকরাও রক্ষা পাবে না। বাঁধ নির্মাণে ভারতের সংকল্প একটি মানবতা ও সভ্যতার বিরুদ্ধে অবস্থান ছাড়া আর কিছুই নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি হত্যার হুমকি পাওয়া প্রসঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'বারবার হত্যার হুমকি দেওয়া হলেও কমিশনের কেউ কোনো কাজ করতে দ্বিধাবোধ করব না।' তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে কথা বলায় এ হুমকি দেওয়া হয়েছে। যত হুমকিই আসুক দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, কারো ব্যবসার ক্ষতি হলে, আইন লঙ্ঘন করে কাউকে কাজ করতে না দিলে এবং দুর্নীতি করে যারা মানুষের অধিকার হরণ করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেও যদি হত্যার হুমকি দেওয়া হয় তবুও মানবাধিকার কমিশন তার দায়িত্ব পালন করে যাবে। ড. মিজান বলেন, 'শুদ্ধভাবে আমাদের আসনে থাকব, কোনো শৈথিল্য দেখবেন না।' জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের 'মানবাধিকার ও অধিকার' রক্ষায় সব সময় কাজ করে যাওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। কর্মশালায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর মহাপরিচালক আহসান জাকির ভূমিকম্পের মাত্রা ও ক্ষয়ক্ষতির ধরন এবং ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ ও দুর্যোগকালে করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অ্যারোমা দত্ত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও দরিদ্ররাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবা-উল-আলম ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

Source : Kaler Khntha

 

 

 

 

 

টিপাইমুখ বাঁধের ভূমিকম্প ঝুঁকি

Print

মো. আলী আকবর মল্লিক | তারিখ: ১৭-০১-২০১২

মহিউদ্দিন আহমদ ২৯ ডিসেম্বর ২০১১ প্রথম আলোয় ‘টিপাইমুখ বাঁধ তৈরি করা কেন জরুরি’ নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, ‘কেউ কেউ আছেন সরাসরি বাঁধের বিরুদ্ধে বলেন না, কিন্তু ভূমিকম্পের জুজুর ভয় দেখান।’ আবার জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান, প্রকৌশলী মো. ইনামুল হক ১৪ জানুয়ারি ২০১১ প্রথম আলোয় ‘টিপাইমুখ ড্যামের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিতর্ক’ নিবন্ধে বলেছেন, ‘ভূমিকম্পের বিষয়টিও বড় নয়। কারণ, এর সম্ভাবনা ১০০ বছরে একবার মাত্র।’ তাঁদের এই দুটি মন্তব্যের আলোকে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছয়টি ভূমিকম্প অঞ্চল হচ্ছে (১) আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া, (২) ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, (৩) জাপান, (৪) মেক্সিকো, (৫) তাইওয়ান ও (৬) তুরস্ক। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পিত স্থানটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছয়টি ভূমিকম্প অঞ্চলের একটিতে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল পাঁচটি টেকটনিক সেটিংস যথা (১) ইস্টার্ন হিমালয়ান কলিশন জোন, (২) ইন্ডিয়া-মিয়ানমার সাবডাকশন জোন, (৩) সিনট্যাক্সিস জোন, (৪) শিলং-প্লাটু আসাম-ভ্যালি জোন ও (৫) বেঙ্গল বেসিন এবং ত্রিপুরা-মিজোরাম ফল্ট বেল্ট দ্বারা গঠিত। এই পাঁচটি টেকটনিক সেটিংসে ১৮৬৯ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক শূন্য বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্পই ঘটেছে ১৭টি। এর মধ্যে ভূমিকম্পের ইতিহাসে বহুল অলোচিত ১৮৯৭ সালের ১২ জুন রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ১ মাত্রার দি গ্রেট আসাম আর্থকোয়েকটি ঘটেছিল টিপাইমুখ থেকে কমবেশি মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে। এই ভূমিকম্পটি এতই শক্তিশালী ছিল যে এর উৎসস্থল থেকে ৭০০ কিমি ব্যাসার্ধজুড়ে ভয়ানক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ভূমিকম্পটির উৎসস্থল থেকে কমবেশি ২০০ কিমি দূরত্বে আগরতলায় ত্রিপুরার রাজবাড়িটি বিধ্বস্ত হয়েছিল। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছিল নাটোরের রাজবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দিনাজপুরের কান্তজিউর মন্দির বা ঢাকার আহসান মঞ্জিল। টিপাইমুখ বাঁধের থেকে ১০০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে গত ১০০ বছরে রিখটার স্কেলে ৫-এর অধিক মাত্রার শতাধিক ভূমিকম্প ঘটেছে। ভারতের সাইজমিক হ্যাজার্ড ম্যাপ দেখতে http://www.bmtpc.org/pdf-misc/eq-india.pdf ঘুরে আসার জন্য যে কারও প্রতি আমন্ত্রণ রইল।

ভূমিকম্প একবার যেখানে ঘটে, সেখানে কোনো রিটার্ন পিরিয়ডে আবারও একই মাত্রায় ঘটতে পারে। তার কারণ, ভূতত্ত্বের বৈশিষ্ট্য, টেকটনিকের ইতিহাস এবং ভূমিকম্প ঘটা—এই তিনের মধ্যে রক্তের সম্পর্কের মতো একটি সম্পর্ক আছে। এ জন্যই ১৮৯৭ সালের মতো একই মাত্রার একটি ভূমিকম্প ওই একই স্থানে ঘটতে পারে। তা ছাড়া ১৮৬৯ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত ঘটা অন্য ১৬টি ভূমিকম্পের যেকোনোটি অজানা কোনো এক রিটার্ন পিরিয়ডে ঘটতে পারে। উল্লেখ করা প্রয়োজন ভারতের পশ্চিমাঞ্চল গুজরাট রাজ্যের ভূজে ২৬ জানুয়ারি ২০০১ রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ঘটে প্রায় ৪০ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটেছিল। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা সত্য প্রমাণ করে কাশ্মীর অঞ্চলে ৪ অক্টোবর ২০০৫ ৭ দশমিক ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ঘটে বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ৭৫ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে। টিপাইমুখ বাঁধ অঞ্চল এ দুটো অঞ্চলের চেয়েও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। ভারতের সাইজমিক জোনিং ম্যাপ এই ঠিকানায়: http://www.mapsofindia.com/maps/india/seismiczone.htm যে অঞ্চলটি এমন একটি ভয়াবহ সাইজমিক হ্যাজার্ড ম্যাপ এবং জোনিং ম্যাপের ইতিহাসসমৃদ্ধ, সে অঞ্চল সম্পর্কে ‘ভূমিকম্পের জুজু’ বলে কঠিন এক বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। উল্লিখিত ১৮৯৭ সালের দি গ্রেট আসাম আর্থকোয়েকটি ঘটেছিল প্রায় ১১৫ বছর আগে। এই ভূমিকম্পটির পুনরাবৃত্তি আজও হয়নি। এ ছাড়া ১৮৬৯ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত আরও যে ১৬টি ৭ দশমিক শূন্য বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প ঘটেছিল তার বয়স ১৪৩ থেকে ২৪ বছর। এর অনেকগুলোর বয়স ১০০ বছর পার হয়েছে, অনেকগুলো ১০০ বছরের কাছাকাছি, অনেকগুলো অর্ধশত বছর। এর মধ্যে কোন ভূমিকম্পটি ১০০ বছরে একবার ঘটবে? টিপাইমুখ বাঁধ হলে বাংলাদেশ এক থেকে দুই হাজার কোটি টাকার ফসল ক্ষতির যে ব্যাখ্যা প্রকৌশলী মো. ইনামুল হক তুলে ধরেছেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু ভূমিকম্প বিষয়ে তাঁর মন্তব্যটি বিভ্রান্তিকর। টিপাইমুখ বাঁধটির উচ্চতা প্রায় ১৬৩ মিটার এবং দৈর্ঘ্য ৩৯০ মিটার। বাঁধের জলাধারের তলদেশে প্রতি বর্গমিটারে পানির অনুভূমিক চাপ থাকবে প্রায় ১৬০ টন (স্থির অবস্থায়)। ভূমিকম্প ঘটলে পানির এই অনুভূমিক চাপ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। কারণ, নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রানুসারে পানির ভর এবং ভূমিকম্পের অনুভূমিক ত্বরণ এই দুটি একে অপরের দ্বারা গুণ হয়ে পানির অনুভূমিক চাপকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে, যার ফলে ভূমিকম্পের মুহূর্তে বাঁধ আরও বেশি ঝুঁকিতে থাকবে। এ জন্যই একই নকশার দুটি পাশাপাশি ভবনের একটির ছাদে যদি সুইমিংপুল থাকে এবং অপরটিতে না থাকে, তবে সুইমিংপুল থাকা ভবনটি ভূমিকম্পের মুহূর্তে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। একই কারণে নদীতে ঢেউ না থাকা অবস্থার চেয়ে নদীতে ঢেউ উঠলে নদীর পাড় সহজে ভাঙে। একই কারণে একজন গোয়ালা গ্রামের রাস্তায় ঘাড়ে করে যখন দুধ বহন করে তখন দুধের পাত্রের মধ্যে খেজুরের পাতা ডুবিয়ে রাখে, যাতে করে হাঁটার সময় তরল দুধ ছিটকে না পড়ে। সংগত কারণে ভাবা স্বাভাবিক যে ভারত টিপাই বাঁধের নকশা ভূমিকম্পের শক্তি আমলে রেখে এমনভাবে করবে যেন সহসা তা ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত না হয়। কারণ, বিধ্বস্ত হলে বাংলাদেশের চেয়ে ভারত আগে ও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাঁধটির পরিকল্পিত অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার উজানে হওয়ায় এর অবস্থান বাংলাদেশের শিয়রে। বাঁধ বিধ্বস্ত হলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার বিষয়টি ৬ জানুয়ারি ২০১২ প্রথম আলোয় নাসরিন আই খান তাঁর নিবন্ধ ‘জরুরি টিপাইমুখে কীটপতঙ্গের দাঙ্গা’ নিবন্ধে তুলে ধরেছেন। তাই এই বাঁধের নকশা সম্পর্কে বাংলাদেশেরও জানা জরুরি। পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় বাঁধটি বানালে উভয় দেশের জনগণ সারা জনমের মতো আতঙ্কের মধ্যে থাকবে। ফারাক্কা থেকেও যে অতিরিক্ত উদ্বেগ বাংলাদেশকে তাড়িত করবে, তা হলো বাঁধটি বিধ্বস্ত হওয়ার আশঙ্কা। বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার মূল কারণই হচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। ড. মো. আলী আকবর মল্লিক: কাঠামো প্রকৌশলী এবং ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটির সাবেক মহাmwPe|


Source : Prothom Alo

 

 

 

 

 

টিপাইমুখ বাঁধ: মৌখিক আশ্বাস নয় প্রয়োজন যৌথ সমীক্ষার

Print

জাহিদুল ইসলাম - জানুয়ারী ১৪, ২০১২


 

সম্প্রতি টিপাইমুখ প্রকল্পের যৌক্তিকতা ও এর স্বপক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ গওহর রিজভীর “টিপাইমুখঃ যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক আলোচনার অনুরোধ”[১, ২] এবং মহিউদ্দিন আহমদের লেখা “টিপাইমুখ বাঁধ তৈরি করা কেন জরুরি”[৩] শিরোনামের নিবন্ধদুটি সংবাদ মাধ্যমে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ডঃ রিজভী তার নিবন্ধে টিপাইমুখ প্রকল্পের ব্যাখ্যায় পানিসম্পদ কৌশলগত দিক থেকে কিছু ভুল তথ্য দিয়েছেন, সেই সাথে জনাব আহমদের নিবন্ধটি তথ্যগত ও ভাষাগত বিচারে অত্যন্ত একপেশে মনে হয়েছে, এছাড়া তাদের উভয়ের বক্তব্যের অনেক অংশেই আমার দ্বিমত রয়েছে যা এই নিবন্ধে তুলে ধরার চেষ্টা থাকবে। ডঃ রিজভী তার নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন যে, টিপাইমুখ প্রকল্প একটি ‘রান অফ দি রিভার’ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। কিন্তু বাস্তবে টিপাইমুখ প্রকল্প ‘রান অফ দি রিভার’ জলপ্রবাহ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নয় বরং তা একটি ‘গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’। রান অফ দি রিভার ও গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হচ্ছেঃ প্রথমটিতে বাঁধের উজানে বড় আকারের কোন জলাধার নির্মান করা হয়না এবং বাঁধ দেবার পর নদীর প্রায় সম্পূর্ন প্রবাহকে ঢালু টানেলে করে ভিন্ন পথে বাঁধের ভাটিতে মূল নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়, অন্যদিকে দ্বিতীয় ক্ষেত্রে বাঁধের উজানে বিশাল জলাধারে পানি সঞ্চয় করা হয়ে থাকে। ‘রান অফ দি রিভার’ প্রকল্পে উজানে পানি ধরে রাখার দরকার হয়না বলে ভাটিতে নদীর প্রবাহের উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন হয়না এবং এর পরিবেশগত ও বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের চেয়ে অনেকাংশেই কম। প্রাপ্ত তথ্যমতে টিপাইমুখ প্রকল্পে বাঁধের কারনে সৃষ্ট জলাধারের ফলে প্লাবিত এলাকা প্রায় ৩০০ বর্গকিলোমিটার ফলে তা আদতে একটি ‘গতানুগতিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’।

 

 

ডঃ রিজভীর মতে, টিপাইমুখ প্রকল্প শুধুমাত্র তখনই ভাটি অঞ্চলে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে যখন সেখান থেকে সেচ ও অন্যান্য প্রয়োজনে পানি প্রত্যাহার করা হবে এবং যেহেতু ভারত সরকার বলছে যে তারা এই প্রকল্পে কোন ব্যারেজ নির্মান করবে না সেক্ষত্রে বাংলাদেশে বরাক নদের দুটি শাখা সুরমা ও কুশিয়ারার পানিপ্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা নয় বরং শুষ্ক মৌসুমে নদীর প্রবাহ বাড়বে আর বর্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রিত হবে। একই রকম যুক্তি পাওয়া যায় জনাব আহমদের নিবন্ধে। কিন্তু এই তথাকথিত বন্যামুক্ত হওয়া কতটা ইতিবাচক। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রয়েছে বিশাল জলাভুমি ও অসংখ্য হাওড়। এর একটি নিজস্ব বাস্তুসংস্থান রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে এখানে বর্ষার সময় পানি বাড়বে, বন্যা হবে ও শুষ্ক মৌসুমে অনেক এলাকা শুকিয়ে যাবে, এর উপর ভিত্তি করেই সেখানকার বাস্তুসংস্থান গড়ে উঠেছে। ‘ইন্সটিটিউট অফ ওয়াটার মডেলিং’ এর ‘হাইড্রোলজিকাল ইম্প্যাক্ট স্টাডি অফ টিপাইমুখ ড্যাম প্রজেক্ট অফ ইন্ডিয়া অন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণার আলোকে[৪, ৫] টিপাইমুখ বাঁধের কারণে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার জলাভূমি ও হাওড় আগের থেকে গড়ে যথাক্রমে ২৬% ও ১১% কমে যাবে, কুশিয়ারা নদী তীরে অবস্থিত কুশিয়ারা-বর্দাল হাওড় গড় বর্ষার সময় পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে এবং কাওয়ারদিঘী হাওড়-এর ২৬% প্লাবন এলাকা হারাবে, বাঁধের ভাটিতে ১০০ থেকে ১৫০ কিমি দীর্ঘায়িত অংশে বিপুল নদীক্ষয়ের ফলে ক্ষয়িত পলি বাংলাদেশে বাহিত হবে যা কিনা বরাক নদীর নিচের অংশে যেখানে থেকে তা সুরমা আর কুশিয়ারা এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে সেখানে জমা হবে যা কুশিয়ারা নদীর বেশ কিছু শাখানদীর মুখ বন্ধ করে দিতে পারে।

জনাব আহমেদ উল্লেখ করেছেন যে তার নিবন্ধে উপস্থাপিত তথ্য কানাডীয় উন্নয়ন সংস্থার (সিডা) অর্থায়নে বাংলাদেশ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নব্বইয়ের দশকে সম্পাদিত একটি বিশেষ সমীক্ষার অংশবিশেষ। যদিও তিনি ঐ সমীক্ষার নাম উল্লেখ করেন নি তবে ধারণা করা যায় উল্লেখ্য গবেষনাটি বাংলাদেশের ‘উত্তর-পূর্ব আঞ্চলিক পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাঃ ফ্লাড একশন প্ল্যান-৬ (NERP-FAP 6)’ এর অধীনে ‘ইনিশিয়াল এনভায়রন্মেন্টাল ইভ্যাল্যুয়েশন’ শিরোনামে প্রকাশিত হয় [৬]। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে টিপাইমুখ প্রকল্পে এটিই একমাত্র উল্লেখ্যযোগ্য গবেষণা যা মূলত কিছু ধারণা বা এসাম্পশনের উপর ভিত্তি করে সংগঠিত হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেছেন যে এর চেয়ে মানসম্মত তথ্য ও উপাত্ত যদি আর কারও কাছে থেকে থাকে, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। অথচ ঐ রিপোর্টেই উল্লেখ আছে যে, ‘যৌথ নদী কমিশনের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে এই প্রকল্পের একটি ন্যূনতম ধারণা পাওয়া যায় যা কিনা ঐ প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রাথমিক প্রভাব যাচাইয়ে ব্যবহৃত হয়েছে।…ভারত কতটুকু পানি এই প্রকল্প থেকে প্রত্যাহার করবে সে সম্পর্কে কোন তথ্য জানা নেই। এই গবেষণার জন্য ধরে নেয়া হয়েছে যে সেচের জন্য ১ মিটার সমপরিমাণ পানি অপসারন করা হবে পানি অপসারন ক্রমাগতভাবে শুষ্ক মৌসুম (নভেম্বর থেকে এপ্রিল)পর্যন্ত চলবে।।’

এছাড়া ঐ রিপোর্টেই মন্তব্য করা হয়েছে যে জলাধার পূরণের সময়কালে অনেক সময় প্রকল্পের সুবিধা তাড়াতাড়ি পাবার জন্য অতিদ্রুত জলাধার পূর্ণ করা হয় যা বাংলাদেশের মত ভাটির অঞ্চলে ভয়াবহ পরিবেশ, বিশেষ করে বাস্তুসংস্থান বিপর্যয় ঘটাবে।

হাওড় এলাকার কথা উল্লেখ করে জনাব আহমদ বলেছেন যে, বর্ষাকালে হাওড়গুলি জলে টইটুম্বর থাকে- কোন ফসল হয় না, কিন্তু তিনি বিস্তীর্ন এই হাওড় এলাকার মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্রের কথা এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, হাওড় অঞ্চলের সমস্যা দু’টিঃ এক, আগাম বন্যা, যার ফলে ফেব্রুয়ারি-মার্চে উঠতি ফসল মাঠেই তলিয়ে যায়, এবং দুই, দেরিতে পানি নিষ্কাশন, যার ফলে বোরো ধান রোপণ করতে দেরি হয়ে যায় এবং তা আগাম বন্যার ঝুঁকিতে পড়ে। তিনি মন্তব্য করেছেন যে বর্ষাকালে বরাক দিয়ে পানিপ্রবাহ হ্রাস পেলে এই দুটো সমস্যাই কমে যাবে। কিন্তু এখানে লক্ষ্যনীয় যে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মানের পর বর্ষার শুরুতে রিজার্ভারে পানি ধরে রাখার প্রয়োজন পড়বে আবার বর্ষার শেষের দিকে পানি ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এর ফলে বর্ষার শুরুতে বন্যা কমে আসতে পারে আবার বর্ষার শেষে বন্যার প্রকোপ বাড়তে পারে।এর প্রভাব এই অঞ্চলের বোরো ধান আবাদের উপর পড়তে পারে। এছাড়া হাওড়গুলি শুষ্ক মৌসুমে যখন শুকিয়ে যায় তখন কৃষকরা সেখানে বোরো ধান বপন করে যা এই অঞ্চলের একমাত্র ফসল। এই ধান বর্ষা আসার আগেই ঘরে ওঠে যা এই লোকগুলির বছরের একমাত্র শর্করার যোগান দেয়। শুকনো মৌসুমে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি এবং তার ফলে সেচের জন্য সুফল বয়ে আনা প্রসংগে জনাব আহমদের মন্তব্যের প্রতি উত্তরে বলতে চাই, প্রাথমিক গবেষণা অনুযায়ী টিপাইমুখ প্রকল্পের কারণে শুষ্ক মৌসুমে অমলসিদের আরো ভাটিতে সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকায় নদী তীরবর্তী অঞ্চলে প্রবাহ শতকরা ৮০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে যা কিনা পানির উচ্চতা ২ মিটার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে। সেক্ষেত্রে সেচের সুবিধা নয় বরং এই বিস্তীর্ন অঞ্চলের ফসল পানিতেই নিমজ্জিত হবে।

টিপাইমুখ প্রকল্পের ভূমিকম্পের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে ডঃ রিজভী মন্তব্য করেছেন যে যেহেতু বাংলাদেশ টিপাইমুখ প্রকল্প থেকে অনেক দূরে সেক্ষেত্রে আমাদের ঝুঁকি অনেক কম। অন্যদিকে জনাব আহমদ এটাকে নিছক ‘জুজুর ভয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ভারতীয় ও বার্মা প্লেটের মিথস্ক্রিয়ার ফলে ভারত ও বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত। ভূতাত্ত্বিকভাবে টিপাইমুখ বাঁধ এলাকা এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চল আসলে অসংখ্য ‘ফোল্ড ও ফল্ট’ বিশিষ্ট এবং এই অঞ্চলে গত ১৫০ বছরে রিক্টার স্কেলে ৭ এর অধিক মাত্রার দু’টি ভূমিকম্প হয়েছে যার মধ্যে শেষটি ছিল ১৯৫৭ সালে যা কিনা টিপাইমুখ প্রকল্প থেকে পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে মাত্র ৭৫ কিমি দূরে। FAP 6 রিপোর্ট (১৯৯৫) মতে ভূমিকম্পের কারণে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে ৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার জলাধারের পানি ঢেউ আকারে ঘন্টায় ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার বেগে ভাটির দিকে ধাবিত হবে এবং তা ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। বাংলাদেশে প্রবেশের সময় এই ঢেউয়ের উচ্চতা হবে ৫ মিটার [৬]। এই বিপুল প্রবাহ ১০ দিন ধরে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং সমস্ত বন্যার্ত এলাকা থেকে পানি সরে যেতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে। সুতরাং টিপাইমুখ প্রকল্পে বাঁধ ভাঙ্গার ঝুঁকিকে ‘জুজুর ভয়’ উল্লেখ করা বা বাঁধ ভেঙ্গে গেলে বাংলাদেশের কম ক্ষতিগ্রস্থ হবার যুক্তি অসাড়।

টিপাইমুখ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ভাটির রাজ্য আসাম ও নাগাল্যান্ড এর আপত্তি না থাকার কথা উল্লেখ করে এই প্রকল্পে বাংলাদেশেরও আপত্তি থাকা উচিৎ নয় এরকম একটি ইঙ্গিত দেবার চেষ্টা করেছেন ডঃ রিজভী। এখানে উল্লেখ্য যে বারাক নদী থেকে পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারণা আসে মূলত আসামের কাছাড় উপত্যকায় বন্যা নিয়ন্ত্রনের চাহিদা থেকেই। সুতরাং এই প্রকল্পে আসামের আপত্তি থাকার কোন কারন নেই। কিন্তু টিপাইমুখ বাঁধ হলে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের যে বিস্তীর্ন হাওড় অঞ্চলের বাস্তুসংস্থান ও জীববৈচিত্র আছে সেটি পরিপূর্নভাবে বিনষ্ট হবে। ফলে আসামের উদাহরণ টেনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই বাঁধের ইতিবাচকতা টেনে আনা অযৌক্তিক।

জনাব আহমদ অতীতে গঙ্গা নদীর উজানে বাঁধ তৈরি ও জলাধার নির্মাণ করে শুকনো মৌসুমে পানিপ্রবাহ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তিনি মন্তব্য করেছেন যে ‘এ ধরনের জলাধার নেপাল কিংবা ভুটানে হলে আপত্তি নেই কিন্তু ভারতে হলেই অনেকের আপত্তি।’ এখানে বলে রাখা ভাল যে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের সেই প্রস্তাব ভারত সমর্থন করলে হয়ত গঙ্গাচুক্তি ১৯৭৪/৭৫ সালেই সংগঠিত হতো। গঙ্গা চুক্তির আপস আলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ে (১৯৭৪-১৯৭৬) যেহেতু শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ে সমস্যার উৎপত্তি হয় তাই এই পর্যায়ে ‘গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির’ বিষয়টি সামনে আনা হয় [৭]। বাংলাদেশ প্রস্তাব করে যে ভারত বর্ষা মৌসুমের বিপুল পরিমাণ পানিকে উজানের জলাধারে (ভারতে না নেপালে) সঞ্চিত করে তা শুস্ক মৌসুমে ব্যাবহার করতে পারে, অন্যদিকে ভারত একটি সংযোগ খালের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র থেকে বিপুল পরিমান পানি গঙ্গায় নিয়ে আসার প্রস্তাব করে।বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা উজানে বাঁধ করতে প্রস্তাব করেছিল কারন তারা চেয়েছিল যেন তাতে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গায় পানি বৃদ্ধি পায় এবং সেই বর্ধিত পানি ভারত প্রত্যাহার করতে পারে ফলে বাংলাদেশকে আর পানিবিহীন থাকতে হয়না শীতকালে।

ডঃ রিজভী উল্লেখ করেছেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী টিপাইমুখ প্রকল্পের সমতাভিত্তিক অংশীদার হওয়া এবং সেখানে উৎপাদিত বিদ্যুতের ভাগ নেওয়ার আমন্ত্রণ পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে, এর ফলে প্রকল্পটির সকল পর্যায়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ থাকবে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় স্থান করে নেওয়া নিশ্চিত হবে। একই কথায় প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই জনাব আহমদের নিবন্ধে। তিনি বরং আরো জোরালো ভাবে মন্তব্য করেছেন ‘এ বাঁধ শুধু ভারতের তৈরি করাই উচিত নয়, বাংলাদেশের উচিত ভারতকে চাপ দেওয়া, যাতে বাঁধটি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়।’ এখানে বলে রাখা ভাল যে, ভারতের এই আমন্ত্রন মেনে নেয়া মানে হচ্ছে টিপাইমুখ প্রকল্পে বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে সেটিকে অস্বীকার করা। ডঃ রিজভী উল্লেখ করেছেন যে সংগৃহীত তথ্য এবং ভারতের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া আশ্বাসের ভিত্তিতে আমাদের উচিত টিপাইমুখ প্রকল্পকে আবেগ ও রাজনীতির ক্ষেত্র থেকে বিযুক্ত করে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিশীলতার আলোকে বিবেচনা করা। তার এই মন্তব্যের সাথে আমি একমত তবে শুধুমাত্র ভারত সরকারের মৌখিক আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে নিশ্চয়তার ঢেকুর তোলার পক্ষপাতি নই। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ আগে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে যৌথ সমীক্ষা ও গবেষণার উদ্যোগ নিয়ে জেনে নেয়া বাংলাদেশের কতটুকু ক্ষতি হচ্ছে। যদি বাঁধের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য এর ডিজাইনে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন সম্ভব থাকে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।আর যদি এই ক্ষতি সহনীয় মাত্রায় আনা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার প্রস্তাব ভারতের কাছে উত্থাপন করতে হবে এবং একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সেটাই হবে আমাদের প্রত্যাশা।


Source : bdnews24

 

 

 

 

টিপাইমুখ বাঁধঃ বাংলাদেশে সম্ভাব্য পরিবেশগত বিপর্যয়

Print

মো. হুমায়ুন কবীর

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমানার প্রায় ২০০ কিলোমিটার উজানে মণিপুর রাজ্যের বরাক নদীতে টিপাইমুখ নামক স্থানে ‘টিপাইমুখ বাঁধ’ নির্মাণের নিমিত্তে ২২ অক্টোবর ভারতের ন্যাশনাল হাইড্রোপাওয়ার করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচপিসি) ও সুতলেজ জলবিদ্যুৎ নিগম লিমিটেড (এসজেভিএন)‘র মধ্যে একটি যৌথ বিনিয়োগ চুক্তি স্বারিত হয়েছে। ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এই টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। এই বাঁধের উচ্চতা হবে ১৬২ মিটার। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ছয়টি ইউনিট থাকবে, যার প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ২৫০ মেগাওয়াট। বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিন্ন নদীকে কেন্দ্র করে একতরফাভাবে কোন একটি দেশ প্রকল্প গ্রহণ করতে পারে না। প্রকল্প গ্রহণ করার আগে অবশ্যই পুরো অববাহিকার ওপর কী প্রভাব পড়বে তার একটি যৌথ সমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।

বাঁধ সম্পর্কে অরুন্ধতি রায় ‘দি গ্রেটার কমন গুড’ এ উল্লেখ করেছেন, “বড় বাঁধের শুরু হর্ষধ্বনিতে আর শেষটা কান্নায়। উন্নত বিশ্বে এগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। কৃষকের জ্ঞান তার কাছ থেকে কেড়ে নেবার নিশ্চিত পদ্ধতি। গরীবের পানি, সেচ আর জমি বড়লোকের হাতে উপহার দেবার উদ্ধত পথ। এগুলোর জলাধার মানুষকে করে গৃহহীন, নিঃস্ব। প্রতিবেশগত বিবেচনায় চরম দুর্দশা সৃষ্টিকারী। এগুলো মাটিকে বানায় আবর্জনা। বন্যা, জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা, খরা আর রোগের বিস্তার এগুলোর পরিণতি। বড় বাঁধের ভূমিকম্প প্রবণতা বৃদ্ধিরও যথেষ্ট প্রমাণ আছে।”

ভারতের লেখক হিজাম হিরামত সিং ‘টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পের সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব: প্রয়োজন পুণর্মূল্যায়ন’ এক নিবন্ধে লিখেছেন, প্রকল্প এলাকায় ২৪০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে একটি লেক তৈরি করা হবে। এখানকার হাজারো মানুষ তাদের জীবিকা হারাবে। এটা সত্য যে, ৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার পরিবেশ সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আন্তর্জাতিক পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এসআই খান বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ হবে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয়। এ বাঁধ নির্মিত হলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ মেঘনা অববাহিকার নদীগুলোর নাব্যতা হারিয়ে একসময় মরে যাবে। চার কোটির বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা ধ্বংস হবে।

সুতরাং পানি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, ভূবিজ্ঞানি, পরিবেশ নিয়ে যারা ভাবেন সবাই একমত, এই টিপাইমুখ বাঁধ নির্মিত হলে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদী অববাহিকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সুরমা ও কুশিয়ারার পানিপ্রবাহ কমে যাবার কারণে মেঘনার পানিপ্রবাহও কমে যাবে। তখন গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদী মিলিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও গতিশীল মিঠা পানির অববাহিকার দেশ বাংলাদেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। কারণ এই গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা স্রোতধারার ১৫% পানি আসে মেঘনা নদী দিয়ে।

বাঁধের ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে সিলেটের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের জীবনযাপন বিপর্যস্ত হবে। পানি প্রবাহ কমে যাবার প্রেক্ষিতে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর প্রজনন প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্লাবনভূমি হিসেবে গড়ে ওঠা জমির উর্বরতা নষ্ট হবে এবং জমিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে যাবে। মাটি তার স্বাভাবিক জীবনী শক্তি হারিয়ে ফেলবে। এ অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাবে। নদীগুলি ভরাটের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে পূর্বের তুলনায় অত্র অঞ্চলে ফসলের ক্ষতি হবে অনেক অনেক বেশি। ফলে কৃষির ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সুরমা, কুশিয়ারা ও মেঘনা নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হবে। বিরাট এলাকার পাহাড়-জঙ্গল পানিতে ডুবে যাবে। জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ কমে গেলে নদী দিয়ে নৌ চলাচল মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি করবে। জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসার প্রেক্ষিতে গাছপালা তরুলতা স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে পারবে না। পশুপাখির বিচরণ কমে যাবে। বন ও বন্যপ্রাণী ধ্বংস হবে। নদী-হাওরগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন হ্রাস পাবে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাবে।
ভূবিজ্ঞানিদের মতে, টিপাইমুখ অত্যন্ত ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। পুরো বরাক অববাহিকায় অসংখ্য ফাটল ও চ্যুতি রয়েছে, যা শক্তিশালী ভূমিকম্পের জন্য সহায়ক। আর এই ফাটল ও চ্যুতি উক্ত এলাকার নদীগুলোর গতিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাছাড়া ভারত ও মিয়ানমার টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের জন্যও এলাকাটি পৃথিবীর একটি অন্যতম ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই অঞ্চলে গত ১৫০ বছরে রিক্টার স্কেলে ৭ এর অধিক মাত্রার দুটি ভূমিকম্প হয়েছে। ১৯৫৭ সালের ভূমিকম্পটির অবস্থান ছিল টিপাইমুখ প্রকল্প থেকে পূর্ব-উত্তর-পূর্ব দিকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরে। ফলে একটি বড় বাঁধের কারণে এখানে ভূমিকম্প হলে বা কোন কারণে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে সঞ্চিত জলরাশি, পলিমাটি প্রভৃতির মাধ্যমে অধিবাসীদের মারাত্মক ক্ষতি হবে। হাজার হাজার মানুষ তাদের আবাসস্থল ও জীবিকা হারাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফারাক্কা বাঁধের কারণে যেমন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ গোটা এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে তেমনি টিপাইমুখ বাঁধের কারণেও একসময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ সারাদেশই পরিবেশগত বিপর্যয়/অবক্ষয়ের সম্মুখিন হবে।

লেখকঃ প্রভাষক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, সরকারি এম এম কলেজ, যশোর।
hkabir_1974@yahoo.com
 
http://www.sonarbangladesh.com/writer/MdHumayunKabir

 

 

 


Source : Amar Shonar Bangla

 

টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও

Print
লন্ডন, ২৪ জানুয়ারী - ভারতের টিপাইমুখে বাধ নির্মাণের প্রতিবাদ, সীমান্ত্মে বিএসএফের বাংলাদেশী হত্যা, তিস্ত্মা চুক্তিতে অনীহা এবং বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদের প্রতিবাদে লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশন ঘেরাও ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। ঘেরাও কর্মসূচী শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের কাছে হস্ত্মান্ত্মরের জন্য হাইকমিশনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধির কাছে একটি স্মারকলিপি হস্ত্মান্ত্মর করা হয়। স্মারকলিপিতে অবিলম্ব্বে ফারাক্কার মতো অরেকটি মরণফাঁদ টিপাইমুখ বাধ নির্মাণ বন্ধসহ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বিরাজমান সমস্যাগুলোর সম্মানজনক সমাধানের দাবী জানানো হয়। যুক্তরাজ্য বিএনপির পক্ষে স্মারকলিপি হস্ত্মান্ত্মর করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিয়া মনিরুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম এ সালামসহ নেতারা।
 
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক ভারতের স্বার্থ রক্ষায় সকল কাজ করে যাচ্ছে অথচ বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় ভারতের কাছ থেকে কোন কিছু আদায় করতে পারছে না। এখন আবার ভারত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ করছে। অথচ টিপাইমুখ বাধ নির্মাণ হলে বাংলাদেশের আন্ত্ম: সীমান্ত্ম নদী সুরমা-কুশিয়ারা মরে যাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বৃহত্তর সিলেট, কিশোরগঞ্জ ও ঢাকা অঞ্চলের প্রায় ৪ কোটি মানুষ। হযরত শাহজালাল ও শাহ পরাণের (রহ:) পূণ্যভূমি সিলেট পরিণত হবে বিরাণভুমিতে। ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও কর্মসূচীতে যুক্তরাজ্য বিএনপি'র ও এর সকল অংগ সংগঠনের সকল ইউনিটের নেতা কর্মী ছাড়াও সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন। শত শত বিক্ষোভকারী বাংলাদেশের প্রতি ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিবাদ জানান। সমাবেশে মিয়া মনিরুল আলম বলেন, সরকার এখন দেশের স্বার্থ রক্ষা, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেয়ে বিরোধী দলকে দমনেই বেশী ব্যস্ত্ম। ব্যারিস্টার এম এ সালাম বলেন, আন্ত্মর্জাতিক নদী বরাকের টিপাইমুখে বাধ নির্র্মাণ করলে সেটি হবে আন্ত্মর্জাতিক নদী শাসন আইনের লংঘন। কিন্তু ভারত আন্ত্মর্জাতিক আইনকে তোয়াক্কা না করেই টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এই বাধ নির্মান হলে বাংলাদেশ বিশেষ করে সিলেট অঞ্চল ভুমিকম্প ও সুনামির আশংকার মধ্যে পড়বে। নষ্ট হবে বাংলাদেশের কৃষি শিল্প। তাই টিপাইমুখে ভারতের এই একতরফা অমানবিক ও অবৈধ বাধ নির্মাণের বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্যই আমরা এই প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করছি। তিনি আরো বলেন, মেরুদন্ডহীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে ভারত অন্যায়ভাবে স্বার্থ আদায় করলেও বাংলাদেশের জনগণ তা কখনোই মেনে নেবেনা। ভারতকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আওয়ামী লীগ সরকারের উপর বাংলাদেশের জনগণের আস্থা নেই। সুতরাং তাদের সঙ্গে খাতির করে জনগণের সঙ্গে শত্রুতা বাড়াবেন না। বিএনপি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক চায় প্রভুত্বের নয়। আমরা মনে করি পারস্পারিক স্বার্থরক্ষা ও মর্যাদার ভিত্তিতে যে কোন সমস্যার সমাধানে বিএনপি সবসময়ই আন্ত্মরিক।
 
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ জেপি, আলহাজ্ব তৈমুছ আলী, শায়েস্ত্মা চৌধুরী কুদ্দুস, আব্দিুল হামিদ চৌধুরী, আক্তার হোসেন, শহিদুল্লাহ খান, নুরুল আমিন, মুজিবুর রহমান, বিএনপির সাবেক আন্ত্মর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির অন্যতম উপদেষ্টা নুরুল আলম মজুমদার, কাজি আঙ্গুর মিয়া, কামাল হোসাইন, আব্দুল মুকিত, যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শরীফুজ্জামান চৌধুরী তপন, লুৎফুর রহমান, মল্লিক হোসাইন, আহমেদ হাসনু, আব্দুল হাই, আহমেদ আলী, এম এ রউফ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, সাদেক হোসাইন মসুদ, সামসুর রহমান মাহতাব, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মনছুর রহমান রুবেল, মিজানুর রহমান, বিএনপি নেতা মো: গোলারাব্বানী, এম এ হান্নান, এনামুল হক এনু, তাজুল ইসলাম, করিম উদ্দিন, আশরাফ গাজী, সেলিম উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম মামুন, আশফাক আহমদ চিনু, এডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী, মিছবাহ উদ্দিন, যুক্তরাজ্য জাসাসের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, আতিকুর রহমান পাপ্পু, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক আহবায়ক দেওয়ান মোক্কাদেশ চৌধুরী নিয়াজ, যুবদলের সহ-আন্ত্মর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এনামুল হক লিটন, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত বাদশা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা রেজাউল করিম রেজা, নিজাম মিয়া, জাহিদ হাসান, মফিজ আহমদ, ছমির আলী, জাফর আলী লিলু, জাহিদ চৌধুরী, বিএনপি নেতা খছরুজ্জামান, মেজর ফারুক, হরমুজ আলী, মকবুল হোসাইন, নুরুল ইসলাম, আব্দুল খালিক, এমাদুর রহমান, ছাত্রনেতা জসিম উদ্দিন সেলিম, আহবাবুর রহমান খান বাপ্পী সফিকুর রহমান রিবলু, বিএনপি নেতা আব্দুল মালিক কুটি, মুজিবুর রহমান, শামীম আহমদ, এম এ শিহাব, সাঈদ জমশেদ আলী, নানু মিয়া, যুবদলনেতা তাজ উদ্দিন, আফজাল হোসেন, হেভেন খান, আলী আহমদ, আবুল কালাম সরফরাজ, শামীম আহমদ, জিয়াউল ইসলাম টিপু, জাকির আহমদ, এমদাদুর রহমান, কিজির মিয়া, তৈয়ব আলী সাজু, নুর মিয়া, আকতার হোসেন,সাব্বির আহমদ ময়না, এস এম লিটন, নাছির আহমদ শাহীন, সাঈদ জাবের হোসেন, আতিকুর রহমান, শাহ আলম, এমদাদ হোসেন, ছাত্রদল নেতা রিপন আহমদ, সাইফুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, আবজার হোসেন, শাহরিয়ার রহমান জুনেদ, আব্দুল ফতেহ, আকলুছ মিয়া, কামাল উদ্দিন, সরফরাজ আব্দুল কালাম, ফেরদৌস আলম, তাসবির চৌধুরী শিমুল, আরিফ হোসাইন, এডভোকেট তানজির আল ওয়াহাব, মুফিদ আহমদ, আব্দুর রহিম জাকির, বাদশা মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, জাসাস নেতা কামরুল ইসলাম, আজাদ খান, বিএনপি নেতা রফিকুল্লাহ, মুফিদ আহমদ, শেখ আলী আহমদ, নর্থওয়েষ্ট বিএনপির সভাপতি শামীম আহমদ, সেক্রেটারী আব্দুল ওয়াহিদ, নিউহাম বিএনপির সাধারন সম্পাদক এম এ কাইয়ুম, কেন্ট বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান, ওয়েষ্ট সাসেঙ্ বিএনপির সভাপতি নুরুল আমিন, সেক্রেটারী মো: আব্দুল মুকিত, নর্থামটন টাউন বিএনপির সভাপতি জাফর আলী, সেক্রেটারী নুরুল ইসলাম, লুটন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই, সেক্রেটারী মনছুর আহমদ রুবেল, বেডফোড বিএনপির সভাপতি ময়না মিয়া, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক, লিডস বিএনপির সভাপতি জাহেদ আলী, সেক্রেটারী রেজাউল করিম, ব্রাডফোর্ড বিএনপির সভাপতি আহাদ নাছিম রেজা, সেক্রেটারী সালেহ আহমদ, বার্মিংহাম ওয়েষ্ট মিডল্যান্ড বিএনপির সভাপতি কাজী আঙ্গুর মিয়া, সেক্রেটারী ছাদেক হোসেন মাসুদ, নিউক্যাসল বিএনপির সেক্রেটারী শাহান আহমদ চৌধুরী, মিলটনকিংস বিএনপি নেতা শাহেল আহমদ, ইষ্টমিডল্যান্ড বিএনপির সভাপতি শহিদুল্লাহ খান, সেক্রেটারী আব্দুল মজিদ তালুকদার, সাউথামটন বিএনপির সভাপতি সাঈদ সাদিকুল ইসলাম, সেক্রেটারী মনছুর রহমান, কভেনট্রি বিএনপির সভাপতি সেক্রেটারী লাকি মিয়া, কাডিফ বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ, সেক্রেটারী মোদ্ভচ্চফা সালেহ উদ্দিন লিটন, স্কটল্যান্ড বিএনপির আহবায়ক আব্দুর রহিম, যুগ্ম আহবায়ক বাদশা মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, সোয়ানসি বিএনপির সভাপতি আহমদ আলী, বাথ এন্ড ব্রিস্টল বিএনপির মতিউর রহমান, সুহেল আহমদ, ডারলিংটন বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম, সেক্রেটারী, মারজানুল হাক, সিটি অফ লন্ডন বিএনপির সেক্রেটারী দিলোয়ার হোসেন টিলু, নর্থ লন্ডন বিএনপির সিরাজুল আমিন, সাউথইষ্ট বিএনপির সাদিক মিয়া, হাইড বিএনপির সভাপতি বাবুল মিয়া, টাওয়ার হ্যামলেটস বিএনপির আহবায়ক কাজী ইকবাল হোসেন দিলোয়ার, যুগ্ম আহবায়ক সুফি মিয়া, হাসান আহমদ, রাজন আলী সাঈদ, শামীম আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের পারভেজ মল্লিক, আইনজীবী ফোরাম নেতা আডভোকেট হালিম বেপারী, এডভোকেট তাহির রায়হান, এডভোকেট হাসনাত, এডভোকেট খলিলুর রহমান, ব্যারিষ্টার জালাল, ব্যারিষ্টার আবিদ, ছাত্রদল নেতা রিপন, কামাল উদ্দিন, আবেদ রাজা, আব্দুল মুকিত, ছানু মিয়া, আখলাকুর রহমান।

Source : deshibideshe
 
 
 
 
 
 
 
 
| + - | RTL - LTR