English French German Italian Portuguese Russian Spanish

Related Articles

Search

ব্রহ্মপুত্র Brahmaputra

হোসেনপুরে পানিশূন্য ব্রহ্মপুত্র নদ : কৃষক জেলেসহ বেকার কয়েক লাখ মানুষ

Print
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
 
 
এককালের উত্তাল ব্রহ্মপুত্র নদ আজ স্মৃতির অতলে হারিয়ে যাচ্ছে। নাব্য সঙ্কট ব্রহ্মপুত্রকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি আবাদে নেমে এসেছে ভয়াবহ স্থবিরতা। নদীর তলদেশে পানি না থাকায় সেচনির্ভর কৃষকরা পড়েছে মহাসঙ্কটে। ব্রহ্মপুত্র নদের দু’পাড়ের মানুষের প্রাণের দাবি, অতিদ্রুত নদের ড্রেজিং করে পানির প্রবাহ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হোক।

সরেজমিন ব্রহ্মপুত্র নদ এলাকায় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত ৫০ বছরেও কোনো ড্রেজিং না করায় নদের তলদেশে পলি জমে এর নাব্যতা হ্রাস পেয়ে এককালের উত্তাল নদ ছন্দ হারিয়ে আজ মরা গাঙে পরিণত হয়েছে। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্রসহ মত্স্য সম্পদ ও নানা জলজ প্রাণী। হাজার হাজার জেলে পরিবার পেশা ছেড়ে বেকারত্ব ঘুচাতে বেছে নিয়েছে অন্য পেশা। খেয়াপারের মাঝিরা বৈঠা ছেড়ে কলের নৌকা চালিয়েও শেষাবধি ছাড়তে হয়েছে বাপ-দাদার পেশা। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা শাখা নদীগুলো এখন বিত্তবানদের ফসলি জমি। ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী দু’পাশে কয়েক লাখ হেক্টর জমি এ নদের পানির সেচ ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল ছিল। বর্তমানে মূল নদে পানি না থাকায় সেচ ব্যবস্থা গভীর সঙ্কটের মুখে পড়েছে। নদীর পানিতে যেসব গরিব কৃষক স্বল্প খরচে সেচ ব্যবস্থার আওতায় ছিল তাদের এখন মাথায় হাত। বিত্তবান কৃষকরা গভীর নলকূপ বসিয়ে সেচ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যারা নগদ টাকা দিতে পারছে তারাই শুধু পানি পাচ্ছে। এ সুযোগে এক শ্রেণীর মহাজন চড়া সুদে হাতিয়ে নিচ্ছে কৃষকের কষ্টার্জিত ফসলের টাকা।

শুকিয়ে যাওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গিয়ে শুকনো মৌসুমে টিউবওয়েলে পানি না ওঠায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। জলবায়ু সঙ্কট ও নদের পানিশূন্যতায় এসব এলাকায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। মঠখলা টোক থেকে হোসেনপুর, গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ, জামালপুর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদ এখন প্রায় বিলীন হতে চলেছে। পানির প্রবাহ না থাকায় নদের তলদেশে চলছে চাষাবাদ। এ সুযোগে এক শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তাকে কৌশলে ম্যানেজ করে বিশেষ প্রভাবশালী মহল কোটি কোটি টাকার বালু ও মাটি অবৈধভাবে বাণিজ্য করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে। ফলে একদিকে সরকার হারাচ্ছে বিরাট অংকের রাজস্ব, অন্যদিকে হুমকির মুখে রয়েছে বিভিন্ন এলাকা, বড় ব্রিজ ও কালভার্ট। শুকনা মৌসুমে পানি কমে গেলে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল দখলে নিতে প্রতি মৌসুমেই মারামারিতে প্রাণহানি ঘটে।

তত্কালীন বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ব্রহ্মপুত্র নদে নৌবহর নিয়ে হোসেনপুর এলাকা দিয়ে যাতায়াত করতেন। ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির নৌবহর ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে নিয়মিত টহল ও রসদ সরবরাহের নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহার করত। সমৃদ্ধ ইতিহাস আজ কেবল অতীত স্মৃতি, নাব্যতা সঙ্কটে ব্রহ্মপুত্র বিপন্ন। এই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি ব্রহ্মপুত্র নদ সরকারি উদ্যোগে ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হোক।
 
 
 
 
 

 
 
 
 
{jcomments on}
 

হঠাৎ পানি কমে গেছে ব্রহ্মপুত্রের উজানের সিয়াং নদের

Print

 

 

বিবিসি ॥ উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের সরকার বলছে তিব্বত থেকে নেমে আসা সিয়াং নদের জলের স্তর অস্বাভাবিক হারে নেমে গেছে গত কয়েকদিনে। এই সিয়াং নদ আসামে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নাম পেয়েছে। অরুণাচল সরকারের একজন মুখ্যপাত্র বলছেন তাদের সন্দেহ হয় চীন সরকার সিয়াং নদের জল প্রত্যাহার করছে অথবা নদটির উজানে কোথাও বড়সড় ধস নেমে গতিপথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন যে বিষয়টি নিয়ে বেজিংয়ে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।


অরুণাচল প্রদেশের সরকার বলছে, যে তিব্বত থেকে নেমে আশা সিয়াং নদের জলের স্তর হঠাৎ নেমে গেছে। জলের প্রবাহ এতটাই কমে গেছে যে, পাচিংহাট শহরের কাছে সেটি প্রায় শুকিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে।


সিয়াং নদটি আরও নিচে ব্রহ্মপুত্র নাম নিয়েছে। রাজ্যে সরকারের মূখপাত্র বিবিসিকে দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাতকারে মি. তাকো বলেন, হঠাৎ এই সিয়াং নদের জল কমে যেতে শুরু করে। তিনি আজ সকালে পাচিংহাট শহরে নদটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। অবস্থা এতটাই খারাপ যে নদ খাতটি পাড় থেকে প্রায় ১ কি.মি. সরে গিয়েছে। নদটি প্রায় শুকিয়ে গেছে। এখন যে কেউ সাঁতরিয়ে নদ পেরিয়ে যেতে পারবে। বলছিলেন অরুণাচল সরকারের মূখ্যপাত্র তাকো দাবি।



রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মি. দাবি বর্তমানে ঐ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক উপদেষ্টার। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কি কারণে সিয়াং নদের এই জলপ্রবাহ কমে যেতে পারে বলে মনে হচ্ছে তাদের। মি. তাকো দাবির কথায় দুটি কারণ জলপ্রবাহ হঠাৎ নেমে যেতে পারে। প্রথমত চীন সরকার সিয়াং বা তার উপনদগুলো থেকে অত্যধিক জলপ্রত্যাহার করছে। বা সেগুলোর গতি মুখ ঘুরিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত হিমালয়ের কোন দুর্গম জায়গায় ব্যাপক ধস নেমেও নদের গতিপথ আটকে গিয়ে থাকতে পারে। যদি কোথাও ধস নেমে থাকে তাহলে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা থাকছে। কারণ ঐ ধস যখন জলের চাপে সরে যেতে থাকবে তখন একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল পাহাড়ী পথে নেমে আসবে যা ডুবিয়ে দিতে পারে অরুণচলের ও ভাঁটি অঞ্চালের বির্স্তীর্ণ এলাকা। এর আগে ২০০০ সালে এ রকম ঘটনা একবার ঘটেছিল। যখন ঐতিহ্যম-িত পাচিংহাট শহরটি জলের তলায় চলে গিয়েছিল।


এর আগে কখনও সিয়াং নদের জলের স্তর এতটা নেমে যেতে দেখা যায়নি বলে নদের পাড়ের মানুষরা বলছেন। তাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে কিভাবে সিয়াং নদের জলস্তর নেমে গেল সেটা জানতে বেজিংয়ে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে দিল্লীতে জানিয়েছেন দেশটির বিদেশমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণা।



আজ দিল্লীতে চীন ও ভারতের বিদেশমন্ত্রীর পর্যায় পূর্বনির্ধারিত বৈঠকের পরে এই মন্তব্য করেন মি. কৃষ্ণা। বিদেশ দফতরের কর্মকর্তা বলছেন যে, চীন আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, দুই দেশের মধ্যে প্রবাহিত নদগুলোর উপরে তাঁরা যে সব প্রকল্প নিয়েছে তার কোনটাতেই জল প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। আর ভারতকে না জানিয়ে এমন কোন প্রকল্প তৈরি করবে না, যাতে ভাঁটি অঞ্চলে থাকা ভারতের সমস্যা হয়। চীনের দেয়া সেই প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় জল কমিশন নিয়মিত ঐ অঞ্চলের নদগুলোর ওপর নজর রাখে। নজরদারি চলে উপগ্রহের মাধ্যমে। এদিকে সিয়াং জলস্তর নেমে যাওয়ার খবর পেয়ে কেন্দ্রের জল কমিশন বিস্তারিত সমীক্ষা শুরু করেছেন। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা নিয়ে গবেষণা করেন এমন কয়েকজন বিজ্ঞানীও বলছেন বিস্তারিত তথ্য যোগাড় করার আগে ভাঁটি অঞ্চলের রাজ্যে আসাম বা আরও নিচের দিকে বাংলাদেশে এর কতটা প্রভাব পড়বে বা আদৌ কোন প্রভাব পড়বে কিনা সেটা বলা কঠিন।

 


 

Source : dailyjanakantha

 

বালুখেকোদের করাল গ্রাস : ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে

Print

সিদ্দিকুল ইসলাম সিদ্দিক, চিলমারী

2nd February,2013

 

কুড়িগ্রামের চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্প এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের চলছে মহোত্সব। অবাধে বালু উত্তোলন করায় ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ডান তীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে রিবমেন্ট এলাকা ধসে পড়ার মুখে রয়েছে। ব্যক্তিস্বার্থের জন্য জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবে বালু উত্তোলন করায় সর্বত্র চলছে আলোচনা। সরেজমিন ডান তীর রক্ষা প্রকল্প এলাকা গিয়ে দেখা যায়, রিবমেন্টের ওপর দিয়ে বালুভর্তি ভারতের শক্তিশালী মহিন্দ্র ট্রাক্টর ওঠা-নামা করছে। এতে ওই এলাকায় নতুন করে ধস দেখা দিয়েছে। রাজার ভিটা, গুরেতিপাড়া মাঝস্থল এলাকায় বালু উত্তোলন করছে রাজার ভিটা এলাকার জনাব আলী, শাহিনসহ একটি গ্রুপ; পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকায় রমনা এলাকার ফরিদুল বালু উত্তোলন করায় ডান তীর রক্ষা প্রকল্প এলাকা পুটিমারী, কাজলডাঙ্গা, গুরেতিপাড়া, রাজার ভিটা ফাজিল মাদরাসা, রাজার ভিটা মহিলা আলিম মাদরাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাউবোর নবনির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, হাজার হাজার একর ফসলি জমিসহ ব্যাপক স্থাপনা হুমকির মধ্যে রয়েছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহেরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি জানান, আমি লোক পাঠিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

 

Source: amardeshonline

 


 

{jcomments on}

 

 

ব্রহ্মপুত্র যমুনা ও তিস্তায় নাব্য সঙ্কট

Print
 
গাইবান্ধায় নৌচলাচল হুমকির মুখে
 
 
 
 
আবু জাফর সাবু, গাইবান্ধা ॥ তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাসহ গাইবান্ধার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সবগুলো নদ-নদীর পানি কমে গিয়ে সেগুলো শাখা-প্রশাখায় ভাগ হয়ে এখন শীর্ণকায় রূপ নিয়েছে। এখানকার নদীর অবস্থা দেখে ভাবাই যায় না এসব নদীই বর্ষাকালে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। পানির প্রবল স্রোতে হাজার হাজার ঘরবাড়ি প্রতি বছর নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এসব নদীর বুকে জেগে উঠেছে এখন ছোট বড় অসংখ্য চর। কোন কোন নদী একেবারে পানি শূন্য হয়ে পড়ায় সেগুলো এখন আবাদী জমিতে পরিণত হয়েছে। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা নৌ ঘাটগুলোর অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। ইতোমধ্যে অনেক নৌঘাট পানি শূন্যতার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। যে সব নৌঘাট এখনও কোনরকমে টিকে রয়েছে সেগুলোরও এখন বেহাল দশা। চ্যানেলের অভাবে নৌযান কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি। যে কোন সময় নৌ চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মূলত পানি সঙ্কটের কারণে নৌ যোগাযোগ এখন হুমকির মুখে। যেসব “রুটে এখনও যান্ত্রিক নৌকাগুলো চলছে জেগে ওঠা চরের কারণে ঘুর পথে চলাচল করতে হচ্ছে বলে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি। অপর দিকে ছোট ছোট নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ওইসব নদীতে ইতোপূর্বে স্থাপিত সেচ যন্ত্রগুলো এখন পানি সঙ্কটের মুখে পড়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট সেচ যন্ত্রের আওতাধীন বোরো জমি পানির অভাবে এখন শুকিয়ে যাচ্ছে। নবেম্বর থেকে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনাসহ ছোট বড় সবগুলো নদীর পানি দ্রুত কমতে শুরু“ করে। অব্যাহত পানি হ্রাসের ফলে নদীগুলো নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। এ তিনটি নদীর পানি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়। বিশাল বিশাল চর জেগে উঠেছে এখন নদীর বুকে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্র্ণ চরাঞ্চলের বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ নদীতে নাব্য থাকার সময় স্বাভাবিকভাবে নৌকায় চলাচল করত। এখন নদী বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চর এবং শীর্ণকায় নদীর শাখাগুলো হেঁটে গন্তব্যস্থলে তাদের পৌঁছতে হয়। ইতোমধ্যে অনেক চরে ভুট্টা, বাদাম ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়েছে। বর্ষাকালে এ দৃশ্য কল্পনাই করা যায় না। এদিকে নদীগুলো নাব্য হারানোর ফলে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রুটে যান্ত্রিক নৌকাগুলো চলাচল করতে পারছে না। ফলে নৌ রুটগুলোর অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। ব্রহ্মপুত্রে সবচেয়ে বড় ঘাট হচ্ছে বালাসী নৌঘাট। এ ঘাটটি অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। নদীর পানি কমে যাওয়ায় এ ঘাটটির পন্টুন এখন শুকনো মাটিতে পড়ে রয়েছে। এরপরও এই ঘাট এলাকায় নদী পাড় থেকে ১৭টি রুটে যাত্রবাহী যান্ত্রিক নৌকা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। চলতে চলতে মাঝপথে বালি চরে সেগুলো আটকে পড়ে। তখন লগি দিয়ে ঠেলে আবার সেগুলো চলতে শুরু“ করে। অথচ আগে ৩০টি রুটে এখান থেকে অবাধে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করত। বর্তমানে এ ঘাট থেকে যে সব রুটে নৌ চলাচল করছে সেগুলো হচ্ছে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর ও কর্তীমারী, সদর উপজেলার মোল্লার চর, কুন্দেরপাড়া ও পারদিয়ারা, ফুলছড়ির সানন্দবাড়ী, ফুটানী বাজার, জিগাবাড়ী, হরিচন্ডি, খোলাবাড়ী, খাটিয়ামারী এবং জামালপুর জেলার বাহাদুরাবাদ, ঘুটাইল ও দেওয়ানগঞ্জ ইত্যাদি। এ উপজেলা থেকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও জামালপুরের ১২টি রুটে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যে সব রুটে এখন নৌ চলাচল করছে সেগুলোতে ঘুর পথে চলাচল করতে হয় বলে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। পানি সঙ্কটের কারণে ইতোমধ্যে বালাসীঘাটে তেল ডিপোতে বার্জ পৌঁছতে না পারার কারণে ডিপোটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এছাড়া একই কারণে বালাসীঘাট-বাহাদুরাবাদ রুটে চলাচলকারী ট্রেনের যাত্রী বহনকারী ফেরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সীমিতভাবে যে রেল ওয়াগন পারাপার হচ্ছে তাও বছরের ৯ মাসেই নাব্য সঙ্কটের কারণে বন্ধ থাকে। অপর দিকে পানির অভাবে নদী তীরবর্তী হাজার হাজার একর জমি এখন সেচ সঙ্কটের মুখে পড়েছে। এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল মোস্তফা আসাফুদ্দৌলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ অবস্থা চলতে থাকলে নদীগুলো আরও ভরাট হয়ে যাবে এবং নাব্য সঙ্কটের সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, এ এলাকায় ব্রহ্মপুত্র বা অন্য নদী ড্রেজিংয়ের এখনও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে দেশের নদীগুলো ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য ফিরিয়ে আনার সরকারের একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে।
 
 
 
 

 

Source : Jonokantha

 

এ দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ

Print

 

এ দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রমত্তা ব্রহ্মপুত্রের আদি রূপ এখন শুধুই ইতিহাস। এই নদ এখন একটি মরা খাল। আবার কোথাও কোথাও এর অস্তিত্বটুকুও খুঁজে পাওয়া যাবে না। একসময় দেশের অভ্যন্তরেই ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদকে কেন্দ্র করে এর দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষ বহু বছর ধরে গড়ে তুলেছিল বসতি ও জীবিকার সংস্থান। কিশোরগঞ্জ জেলাতেই একদা ব্রহ্মপুত্র নদ ১০ থেকে ২০ কিলোমিটার প্রশস্ত ছিল। সেই উত্তাল নদকে ঘিরেই বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছিল প্রসিদ্ধ নৌবন্দর ও বাণিজ্যকেন্দ্র। এর শাখা নদীগুলোও ছিল প্রবল খরস্রোতা। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে আজ শাখা নদীর চিহ্ন পর্যন্ত নেই। ব্রহ্মপুত্র নদও মৃতপ্রায়। এই নদের অববাহিকায় পরিবেশসহ কৃষি আবাদেও নেমে এসেছে ব্যাপক বিপর্যয়। সেচব্যবস্থা নিয়ে কৃষকেরা পড়েছেন মহাসংকটে। ৫০ বছরেও এখানে কোনো খনন না হওয়ায় এর তলদেশ পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্যসহ মৎস্য সম্পদ ও নানা জলজ প্রাণী। সমৃদ্ধ ইতিহাস ধারণ করা এই নদ আজ নাব্যতা সংকটে। খনন করে এর নাব্যতা ফেরানো এই নদের দুই পাড়ের হাজার হাজার মানুষের প্রাণের দাবি। তাই আসুন, ব্রহ্মপুত্র বাঁচাতে আমরা সচেষ্ট হই। ব্রহ্মপুত্র বাঁচাই, নিজেরা বাঁচি। জাহেদুর রহমান ৫৫ পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।

 


 

 

Source : Prothom Alo

 
| + - | RTL - LTR